সাভারের নাভানা ফার্নিচার কারখানায় অস্ত্রের মুখে নিরাপত্তা কর্মীদের জিম্মি করে রাতভর ডাকাতি

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার সাভারের একটি ফার্ণিচার কারখানায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ টাকা ও রাতভর ফার্ণিচার তৈরির মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১ টার দিকে ডাকাতির বিষয় নিশ্চিত করেছেন সাভারের নাভানা ফার্ণিচারের ‘এইচআর অ্যাডমিন’ বিভাগের এক্সিকিউটিভ এইচআর আরিফ হোসেন ও এক্সিকিউটিভ অ্যাডমিন সোহেল আহমেদ। এর আগে গতকাল সন্ধ্যা ৭:১৫ মিনিটের দিকে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকার নাভানা ফার্ণিচারে ডাকাত প্রবেশ করে ভোর পর্যন্ত ডাকাতি করে পালিয়ে যায়।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত আনুমানিক ০৭:১৫ মিনিটে ৩ থেকে ৪ জন কারখানার গেটে এসে কোম্পানির মালামাল নিয়ে আসার কথা বলে চালান দেয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন মোঃ সিদ্দিক ও মোঃ আবু বকর নামের দুইজন নিরাপত্তা কর্মী। তারা গেট খোলার সাথে সাথে ৩/৪ জন ডাকাত কারখানার ভিতরে প্রবেশ করে তাদের মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপরই ভিতরে আরও ২৫/৩০ জন ডাকাত কারখানার ভিতরে প্রবেশ করে রাত সাড়ে ৮ টার মধ্যে অস্ত্রের মুখে মোট ১৩ জন নিরাপত্তা কর্মীর হাত-পা বেঁধে একটি কক্ষে বন্দী করে রাখে। এসময় নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে থাকা মোবাইল ও নগদ প্রায় ৬০ হাজার টাকা নেয় ডাকাতরা। এরপর নিরাপত্তা কর্মীরা শুধু তাদের চলাফেরা এবং গাড়ি চলাচলের শব্দ শুনতে পান। আনুমানিক ভোর ০৪:৩০ মিনিটে আর কোন শব্দ শুনতে না পেয়ে মুখ দিয়ে একে অপরের বাঁধন খুলতে শুরু করে নিরাপত্তা কর্মীরা। পরে তারা দেখতে পায় কোম্পানির একটি হাইয়েচ গাড়ি ও বিভিন্ন ধরনের মালামাল এবং মালিকের আফিসে থাকা নগদ টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়।কারখানাটির সিকিউরিটি ইনচার্জ (নিরাপত্তা বিভাগের সুপারভাইজার) আহাদ  বলেন, গতকাল আমি নিজেও দায়িত্ব পালন করছিলাম। কারখানার মালামাল আসার কথা বলে প্রথমে ২/৩ জন একটি চালান দেয় দুই নিরাপত্তাকর্মীকে। পরে গেট খুলে দিলে ডাকাতরা ভিতরে প্রবেশ করে সামনে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং হাত-পা বেঁধে ফেলে। প্রায় ১ ঘন্টা ১৫ মিনিটের মধ্যে কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৩ জন নিরাপত্তাকর্মীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি ঘরে বন্দি করে। পরে সারা রাত তারা কারখানা লুট করে নিয়ে যায়। তাদের সবার হাতে অস্ত্র ছিল। কারও হাতে পিস্তল কারও হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল। কারো মুখে মাস্ক, কেউ গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে কারখানায় প্রবেশ করেছিল। তারা পরিকল্পিতভাবে কারখানায় প্রবেশ করে ডাকাতি করেছে। কারখানাটির এইচআর অ্যাডমিন বিভাগের এক্সিকিউটিভ এইচআর আরিফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি  বলেন, এখন আমরা সবাই আতঙ্কিত, এই মহুর্তে কিছু বলতে পারছি না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিস্তারিত বলবেন। কি পরিমান নগদ টাকা ও মালামাল লুট হয়েছে তা জানাতেও অস্বীকৃতি জানান তিনি।সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ও ট্যানারী ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজ উদ্দিন  বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে নাভানা ফার্ণিচারে আমরা গিয়েছিলাম। তাদের অভিযোগ পেয়েছি, আমরা খতিয়ে দেখছি। কারখানা কতৃপক্ষ ক্ষতির পরিমান এখনও নিশ্চিত করতে পারে নি। তারা ক্ষতির পরিমান জানাতে লুট হওয়া মালামালের সামারি করছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *