নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাভারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি সন্ত্রাসী জাকির ওরফে মামা জাকিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত জাকিরকে সাভার মডেল থানা পুলিশ আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে শনিবার রাতে ডিএমপি ডিবি পুলিশের সহায়তায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এ ব্লকের একটি বাসায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা। গ্রেপ্তারকৃতা জাকির আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জিরাবো ফুলতলা মহল্লার আবুল হোসেন আলী ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীবের কথিত ভাগিনা পরিচয়ে তার সকল অপকর্মের সহযোগি হিসেবে কাজ করতো। পুলিশ জানায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্বজনেরা সাভার মডেল থানায় বেশ কিছু মামলা দায়ের করেছেন। এর মধ্যে ৭ টি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জাকির হোসেন ওরফে মামা জাকির। গত ৫ ই আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গ্রেপ্তার এড়াতে মঞ্জুরুল আলম রাজিবের স্ত্রী ও ছেলেকে সাথে নিয়ে ছদ্মবেশে পলাতক ছিলো জাকির। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীবের অবৈধ অর্থ ও সম্পত্তি দেখভাল করতেন মামা জাকির। সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাজিবের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তিনিও হয়ে ওঠেন কয়েকটি ফ্যাক্টরিসহ বিপুল সম্পত্তির মালিক। চলাফেরা করতেন কয়েক কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল গাড়িতে। সাভারে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাজিব ও জাকিরের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে দিতে হতো মোটা অংকের মাসোহারা। চাঁদাবাজি আর দখলদারির মাধ্যমে জাকির হয়ে ওঠেন বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক।
সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে নিহতের স্বজনদের দায়েরকৃত ৭ টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মামলায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারসহ পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জাকিরকে পুলিশ রিমান্ডে আনা হয়েছে।