গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো চিফ, ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ৭নং চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের মহজমপুর পূর্বপাড়া (মোড়ল বাড়ি) জমি সংক্রান্ত বিরোধে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক নিরীহ পরিবারের বসত বাড়ি ও দোকানে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ আবুল হাশেম গংদের বিরুদ্ধে। গত( ১৮ অক্টোবর ) রাতে মহজমপুর এলাকার মোহাম্মদ আফজাল হোসেন এর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা’র বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় আবুল হাশেম, আঃ মোতালেব, মোঃ শামীম মিয়া’র নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। যাহার জিডি নং ৩২১৫, তারিখ ২৯/ ১০ /২০২৪, উপরোক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ মডেল থানার পুলিশ কর্মকর্তা সারেজমিনে ঘটনাস্থল তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, যার ফলে উপরোক্ত জিডির প্রেক্ষিতে আদালতের অনুমতিক্রমে বিবাদীদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের করার অনুমতিক্রমে একটি মোকদ্দমা দায়ের করে এফ আই আর করা হয়, মোকদ্দমা নং- ৫৫৭/২৪,
ভুক্তভোগী রাজিয়া সুলতানা জানান, অভিযুক্তদের সাথে জমিজমা ও পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত বিষয় নিয়ে স্থানীয় দরবার শালিস করেও মীমাংসা না হওয়ায় পরবর্তীতে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি এবং আদালতে মামলা দায়েরের পর ও অভিযুক্তরা বিরোধ পূর্ণ জমি জোর পূর্বক বে দখল করার জন্য পায়তারা চালিয়ে আসছে। এরই জের ধরে ঘটনার দিন পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করে আমার নাম ধরে ডাকাডাকি ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে।
এসময় গালাগালি করার কারন জিজ্ঞেস করলে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার দোকানসহ বসত বাড়িতে তার সাথে থাকা অপরাপর অভিযুক্ত সবাই মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার দুই ছেলে রাহাত, ফাহাদ কে পিটিয়ে আহত করে। আমাকে টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি করে,আমার পরিবারের লোকজন কে এলোপাতাড়ি মারধোর করে জখম করে। এ সময় বসত ঘর ও দোকানে অনধিকার প্রবেশ করে ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র ভাংচুর করে প্রায় ১০, ০০০ (দশ হাজার ) টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। এ বিষয়ে আমার স্বামী মোঃ আফজাল আদালতে আমাদের পরিবারের সকলের জান ও জীবনে নিরাপত্তার জন্য একটি ৭ ধারা মোকদ্দমা করেন। যার নং-৮৪৪/২০২৪।
মামলার নোটিশ আদালত থেকে সরকারি জারি গারদ পিয়ন আবুল হাসেম গংদের বাড়িতে নোটিশ দিতে গেলে তাকেসহ আমাদের পরিবারের উপর উপর অমানবিক অশ্লীল, অশালীন কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ করতে থাকে এমনকি পিয়নকেও গালিগালাজ করে বিতাড়িত করে দেয়। এসময় হুমকি প্রদান করে বলে আমরা মোকদ্দমা না উঠালে আমার পরিবারের লোকজন কে খুন করে লাশ গুম সহ নিজেদের ঘরে নিজেরাই আগুন দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশান্তর করবে।
প্রতিপক্ষের এই তান্ডবলীলা আশেপাশের লোকজন সহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান হাবু মড়ল বলেন, প্রতিপক্ষ সকল দিক দিয়ে শক্তিশালী হওয়ায় নিরীহ রাজিয়া সুলতানা এর পরিবার অসহায় জীবন যাপন করছে। বিষয় টি নিয়ে আদালতে ৪৪৯/২০২৪ মামলা চলমান অবস্থায় ভূমি খেঁকো চক্রটি যেন আইন শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে না পারে এবং বিরোধ পূর্ণ ভূমিতে কিছু করতে না পারে এ বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতের প্রতি সু বিচার দাবি জানিয়েছেন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ভুক্তভোগী পরিবার এবং স্থানীয় এলাকাবাসী।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, এই ন্যাক্কারজনক অমানবিক কর্মকান্ডের নেপথ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা, অবসরপ্রাপ্ত কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা (ম্যানেজার) ৩৩ নং সিটি কর্পোরেশন শম্ভুগঞ্জ বাজার এর মোহাম্মদ আব্দুল সেলিম মন্ডল, ৭ নং চর নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা মোঃ শামীম মন্ডল, মোঃ শরীফ ও আব্দুল মোতালেব মন্ডল প্রমুখ। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবী করেন ভুক্তভোগী রাজিয়া সুলতানা।