দেশের সুস্থতায় যুবসমাজের ভূমিকা অপরিহার্য- ময়মনসিংহে স্বাস্থ্য সচিব

সারা বাংলা

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ময়মনসিংহ :
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ বলেছেন, দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ হচ্ছে যুব সমাজ। এখানে যুব ও যুব নারী রয়েছে। দেশ গঠনে ও সুস্থতা রক্ষায় এ সমাজের ভূমিকা অপরিহার্য। দেশের এ সমাজের প্রায় ৫ কোটি ৩০ লক্ষ যুব ও যুবনারী যদি একসাথে কাজ করে তাহলে আমরা কোথায় পৌঁছবো সেটা আমাদের ভাবা উচিত।
সচিব আজ শনিবার (০৯ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ‘মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুবদের ভূমিকা শীর্ষক জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ও যুব উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময়’ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় ময়মনসিংহ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা, যুব উদ্যোক্তা, যুব প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের দেশে যুব সমাজের মধ্যে যুবনারী সবচেয়ে কঠিন সময় পার করে। বাল্যবিবাহ থেকে শুরু করে অল্প বয়সে সন্তানের মা হওয়া, ঘরের ভিতরে ও বাহিরে নির্যাতনের শিকার হওয়া, এটা যুবনারীর সাথে প্রায়শই ঘটে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইভটিজিংয়ের শিকার যেমনটা হয়ে থাকে কর্মক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। এসব থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। যুবনারীদেরকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তা নাহলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। নির্যাতন প্রতিরোধ করতে যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। একাজে সহযোগিতায় পিছিয়ে থাকলে হবে না সাংবাদিক ও শিক্ষকমন্ডলীর।
বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, তরুণরা যে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা আগামীর চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে তরুণদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তারুণ্যের শক্তির ভূমিকা দেশকে আরো সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলবে। তরুণ সমাজকে আমরা মূলধারার মূল শক্তিতে নিয়ে আসবো। তরুণদের অংশগ্রহণ ও ভাবনাকে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি। ৬৪ জেলায় ৬৪টি খাল পরিষ্কারের মতো নানান জনমুখী কাজের উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে।
এসব উদ্যোগে যুবক ও যুবতী ভাই-বোনেরা সরাসরি ভূমিকা রাখছে। সামাজিক সচেতনতামূলক আরো অনেক কাজ আমাদের বাকি রয়েছে। আগে যারা কোনো প্রশিক্ষণ নেয়নি তাদের মধ্য থেকে প্রায় ৯ লক্ষ যুব ও যুবনারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আমরা এখানেই স্থির থাকবো না, নতুন নতুন কর্মসূচি নিয়ে আসবো। তরুণ-তরুণীদের মাঝে দক্ষতার গণজোয়ার সৃষ্টি করা হবে। তারা আজকের বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।
বৈষমবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে যুব সচিব বলেন, এ আন্দোলনে প্রায় ৩০ হাজার যুবক আহত হয়েছে। ৭০০ জনের মতো চোখের দৃষ্টি হারিয়েছে। সরকারের দিক থেকে তাদের জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। এদেশ তারুণ্যের উৎসবে মেতে উঠবে। জনসংখ্যার ৬৫% কর্মক্ষম লোকের কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাবে। যুবক-যুবতীর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মাঝে সভায় উপস্থিত ছিলেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার, রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের প্রতিনিধি মোহাম্মদ শরিফুর রহমান বিপিএম, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ হারুন-অর-রশীদ। সভায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *