গোলাম সারওয়ার সজলঃ
ঢাকার সাভারে একটি সিরামিক কারখানায় ভাংচুরের খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আকলাকুর রহমান আকাশ (৩৫) নামে এক সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। রবিবার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ভাগলপুর এলাকায় বেঙ্গল ফাইন সিরামিকস লিমিটেডের কারখানায় এ হামলার শিকার হন তিনি।
আহত আকাশ মাহমুদ মানিকগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তিনি ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারের সাভার সংবাদদাতা। হামলাকারীরা কারখানা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে জানা যায়। ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক জানান, বেঙ্গল ফাইন সিরামিকস লিমিটেডের কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে দখলের চেষ্টা চলছিল। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লাঠিসোটাসহ মালিকপক্ষের একটি অংশ জোরপূর্বক কারখানায় ঢুকে ভাংচুর করে ও শ্রমিকদের কারখানা থেকে বের করে দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান ওই সাংবাদিক। ভাংচুরের ছবি তোলার সময় তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
হামলায় ভুক্তভোগী আকাশের মুখ, চোখ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়েছে। তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।ভুক্তভোগী সাংবাদিক আকাশ মাহমুদ বলেন, ‘সকালে আমার এক সহকর্মী জানান সিরামিক্সে বহিরাগত প্রায় ২৫০-৩০০ লোক ঢুকে সিসিটিভিসহ সবকিছু ভাংচুর করছে। এটি শুনে আমি সেখানে যাই। ওই সময় দুই গাড়ি পুলিশও সেখানে যায়। আমি সেখানে ঢুকে দেখতে পাই, কিছু ছেলেপেলে ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, হার্ডডিস্ক ভাংচুর করছে। আমি সেখানকার দুটি ছবি তুলি। এরমধ্যে একজন আমাকে ছবি তুলতে দেখে কাছে এসে বলে, ‘এই ছবি তুলছ কেন, মোবাইল দে’ এটা বলেই হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। তারপর অতর্কিতভাবে ৫০-৬০ লোক যে যেভাবে পারছে, কিল-ঘুষিসহ পেটাচ্ছিল। ’হামলাস্থল থেকে আকাশ মাহমুদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন সাংবাদিক নোমান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘সিরামিক্স দখলের খবর পেয়ে সকাল ১০:৩০ এর দিকে আকাশ সেখানে যান। তার কাছ থেকে শুনেছি, দখলকারীরা সিসিটিভি, ডিভিআরসহ সবকিছু ভাংচুর করছিল। সেটির ছবি তোলার সময় সন্ত্রাসীরা তাকে ঘেরাও করে মারধর করে। পরবর্তীতে আমিও সেখানে উপস্থিত হই। এ অবস্থায় দেখে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি। পুলিশ সেখানে থাকলেও কিছু করেনি।’এনাম মেডিকেলের চক্ষু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘ওনার চোখের চারপাশে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং কর্ণিয়ার মাঝের একটি অংশ উঠে গেছে। চোখের ভেতরে আরও কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না সেটা জানার জন্য পরীক্ষা করা হবে।
সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান “দৈনিক বঙ্গ সংবাদকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। লিখিত অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’