মৌখিক অভিযানেই সীমাবদ্ধ থাকেন যে ‘ওসি’

অপরাধ

*সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় মামলা, ৭২ ঘণ্টায়ও গ্রেফতার নেই *

*আসামীরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সাংবাদিকের *

*জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত দাবি জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার *

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২১ মে জাজিরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন সকাল ১১ টার দিকে জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের ফরাজী দারুস সুন্নাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে ভিডিও ধারণ করেন বার্তা বাজারের প্রতিনিধি আশিকুর রহমান হৃদয়সহ কয়েকজন সাংবাদিক। এসময় মোটরসাইকেল প্রতীকের ব্যাচ পরিহিত এক ব্যক্তি তাদের প্রথমে বাঁধা দেয় এবং তাদের মারধর করে মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এমন তথ্য পেয়ে দৈনিক সংবাদের উপজেলা প্রতিনিধি মো. পলাশ খানসহ ১০ জন সাংবাদিক সেখানে তথ্য সংগ্রহে যায়। এসময় মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজীর সমর্থকরা তাদের উপর চড়াও হয়।

একপর্যায়ে সঙ্গে থাকা অন্য সাংবাদিকরা তাদের ছাড়াতে গেলে অন্তত ৩০-৪০ জন মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থক তাদের উপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে ১০ জন সাংবাদিক আহত হয়। এরমধ্যে পলাশ খানসহ ৫ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়। এসময় হামলার শিকার সাংবাদিকদের সাথে থাকা মোবাইল, ক্যামেরাসহ তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ছিনিয়ে নিয়ে যায় ও ভেঙ্গে ফেলে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে মামলার বাদী দৈনিক সংবাদের সাংবাদিক মো. পলাশ খান বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় আমিসহ ১০ জন সাংবাদিক আহত হয়। এ ঘটনায় আহত সাংবাদিকদের পক্ষে আমি বাদী হয়ে জাজিরা থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে গত ২২ মে একটি মামলা দায়ের করেছি। তবে মামলার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আসামীরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধি আব্দুর রহিম বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের সহকর্মী বার্তাবাজারের প্রতিনিধি আশিকুর রহমান হৃদয়সহ একাধিক গণমাধ্যমকর্মী আহত হয়েছেন, এমন সংবাদ পেয়ে কেন্দ্রটিতে আমরা বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী গেলে আমাদের ওপরেও হামলা চালায় মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকরা। এ ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি, যা দুঃখজনক।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, গত ২১ তারিখ নির্বাচনের দিন পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এজহারে উল্লেখিত আসামীসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *