গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দ্বি-মুখী লড়াইয়ে উত্তপ্ত ভোটের মাঠ

রাজনীতি

বিশেষ প্রতিনিধি ওয়াজেদ আলীঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরগরম হয়ে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। দ্বিতীয় ধাপের এ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। শেষ মুহূর্তে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়নের মাঠঘাট চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ২ জনই আওয়ামী লীগের দলীয় হওয়ায় বেশ উত্তপ্ত নির্বাচনী মাঠ। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। সমান তালে চলছে প্রচার-প্রচারণা। আওয়ামী লীগের ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী বা অন্য কোন দলের প্রার্থী না থাকায় নিজ নিজ এককভাবে সুবিধা নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগলেও সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, দ্বিমুখী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে জিততে হবে। মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সব খানেই দুই প্রার্থীর জোরালো ভূমিকা। জমজমাট প্রচার-প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো উপজেলা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে গণসংযোগ। ব্যানার-পোস্টার আর বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে গ্রাম থেকে শহর।
চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসতে মাঠে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পুনরায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জননেতা আব্দুল লতিফ প্রধান (মোটর সাইকেল) মার্কা, অন্যদিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক শাকিল আকন্দ বুলবুল (আনারস) মার্কা নিয়ে প্রথম বারের মতো নির্বাচনে লড়ছেন।
এই নির্বাচনে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী হলেন শরিফুল ইসলাম তাজু (মাইক), এম এ মতিন মোল্লার (চশমা), পাপন মিয়া (তালা), মাহাবুর রহমান (টিয়া পাখি), মেসবাহ নাহিফুদ দৌলা (টিউবয়েল) মার্কা নিয়ে লড়ছেন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী হলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাকিলা বেগম (পদ্মফুল), আফরোজা খাতুন সুইটি (হাঁস), পাপিয়া রাণী দাস (সেলাই মেশিন), উম্মেজাহান (প্রজাপতি), ফাতেমা খাতুন (ফুটবল), মমতা বেগম (কলস), সাথী আক্তার (বৈদ্যুতিক পাখা) মার্কা নিয়ে লড়ছেন।
ভোটাররা বলছেন, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। তাদের মতে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তাজু (মাইক) মার্কা আর গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি জননেতা এম এ মতিন মোল্লার (চশমা) মধ্যে লড়াই হবে। আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আফরোজা খাতুন সুইটি (হাঁস) ও পাপিয়া রাণী দাস (সেলাই মেশিন) মধ্যে লড়াই হবে। তাদের মধ্যে পাপিয়া রাণী দাস সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করে নিয়েছেন। তাই বিপুল ভোটে তার জয়ের সম্ভাবনা বেশি। মোস্তাক আহম্মেদ, নজরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন ভোটার বলেন, আমরা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন চাই। ভোটকেন্দ্রে কোনো ঝামেলা না হলে মানুষ স্বাচ্ছন্দে ভোট দিতে পারবে। আমাদের আপদে-বিপদে যাকে কাছে পাওয়া যাবে, আমরা তাকেই ভোট দেব।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাখাওয়াত হোসেন জানান, উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৮০৫ জন। এর মধ্যে অর্ধেক পুরুষ ভোটার ২ লক্ষ ২০ হাজার ৫৭৯ জন এবং নারী ভোটার ২ লক্ষ ২৫ হাজার ২২০ জন। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোাটার সংখ্যা রয়েছে ৬ জন। ভোটারগন ১শত ৭২টি ভোট কেন্দ্রে ১২শত ৮৪টি পুলিং বুথের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোট গ্রহনের সকল প্রকার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *