শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মুদিদোকানী হত্যা মামলায় প্রদিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর

জাতীয়

ঢাকা, ১৪ আগস্ট, ২০২৪ (বস) : বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর বছিলায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদকে হত্যার অভিযোগে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছে।
আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী আল ফারাবী মামলার এজাহার গ্রহণ করে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণপূর্বক পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।
এই মামলায়, ছাত্র-জনতার চাপের মুখে সদ্যবিদায়ী সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খা কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে আসামী করা হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন (যা পরবর্তীতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে রুপ নেয়) চলাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে গত ১৯ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলায় ৪০ ফিট চৌরাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু সায়েদ নিহত হন। জোরকরে ক্ষমতায় থাকার অভিলিপ্সা শেখ হাসিনাকে বেপরোয়া করে তুলে। তার এ মনোভাবে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে। শুরু হয় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন। এ আন্দোলনে সাধারণ জনতা যোগ দেওয়ায় গড়ে উঠে গণআন্দোলন। গত ৫ আগস্ট এই আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হলে বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ওই দিনই দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। দেশ ছাড়ার ৯ দিনের মাথায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এটিই প্রথম মামলা।
মামলার বাদী আদাবর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এস এম আমীর হামজা শাতিল। তিনি সচেতন নাগরিক হিসেবে একজন নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে এ মামলাটি করেছেন বলে জানান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওইসব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বহু ছাত্র-জনতা নিহত ও আহত হন। গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বসিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদের মাথায় গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ আবু সায়েদ  ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নিহত সায়েদকে তার গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদায় নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে দাফন করা হযেছে। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে, তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। এজন্য বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি এ মামলা করলেন।
মামলার অভিযোগে বাদী বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করতে বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালায়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকা- ঘটিয়েছে। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *