শারমিন সরকার বৃষ্টি খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধ :
বাদী শুভা দেবী চাকমা (৫৬), স্বামীঃ বঙ্গমিত্র চাকমা, পিতাঃ চিত্তকুমার চাকমা, মাতাঃ হেত্রীপুদি চাকমা, সাং- মানিককা পাড়া, ০৯ নং ওয়ার্ড, ০৫ নং উল্টাছড়ি ইউপি,থানা- পানছড়ি, জেলা-খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা তার মেয়ে ভিকটিম (১৭) নিখোঁজ সংক্রান্তে গত ০২/০৬/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে পানছড়ি থানায় হাজির হয়ে একটি জিডি করেন এবং অপর বাদী মালাবী চাকমা (৪৯) তার মেয়ে ভিকটিম (১৬), পিতা- গোলক বাঁশি চাকমা, সাং- জ্যোতির্ময় কার্বারী পাড়া, ০৯ নং ওয়ার্ড, ০৩ নং পানছড়ি ইউপি, থানা-পানছড়ি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাকে নিখোঁজ সংক্রান্তে গত ০৪/০৬/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে পানছড়ি থানায় জিডি করেন। উল্লেখ্য যে নিখোঁজ ভিকটিমদ্বয় পরস্পর বান্ধবী।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার জনাব মুক্তা ধর পিপিএম (বার) মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায় তাদের নিখোঁজ সংক্রান্ত অবগত হয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব মোঃ জসীম উদ্দিন পিপিএম এর নেতৃত্বে পানছড়ি থানার অফিসারদের সমন্বয়ে একটি আভিযানিক ও চৌকশ টিম গঠন করেন। বিভিন্ন তদন্ত কৌশল অবলম্বন করে দেশব্যাপী সম্ভাব্য সকল জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে পানছড়ি থানা পুলিশের চৌকশ দলটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার তুরাগ থানাধীন উত্তরা ১২নং সেক্টর, প্রিয়াংকা সিটি, সাবদার হোসেন রোড, হরিজেন্টাল-১, ডুপ্লেক্স-০২ এর অভিযুক্ত ০১। সুমি চাকমা প্রকাশ হেলি (৩৬) ও ০২। XIAO.SHUHUI (৩৪) দ্বয়ের ভাড়া বাসায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত বাসা হতে ভিকটিম ও তার বান্ধবী (অপর ভিকটিম) সহ উক্ত বাসায় অবস্থানরত অপরাপর ০৩ জন ভিকটিমদের উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক অভিযুক্ত XIAO.SHUHUI (৩৪) এবং সুমি চাকমা প্রকাশ হেলি (৩৬) কে আটকের সফল অভিযান পরিচালনা করা হয়। ভিকটিমদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ০১/০৬/২০২৪ খ্রিঃ তারিখের পূর্ব হতে বেশ কিছুদিন যাবত অভিযুক্ত সুমি চাকমা প্রকাশ হেলি (৩৬) পরিচিত মোবাইল ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে ভিকটিমকে চীন দেশে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখায়। একপর্যায়ে ভিকটিম চীনে যাওয়ার জন্য রাজি হয় এবং বিষয়টি অপর ভিকটিমকে জানালে সেও চীনে যাওয়ার জন্য রাজি হয়। পরবর্তীতে গত ০১/০৬/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সকাল অনুমান ০৮.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম ও তার বান্ধবী (অপর ভিকটিম) দ্বয় পানছড়ি হতে প্রথমে সিএনজি গাড়িযোগে খাগড়াছড়ি সদরে আসে এবং পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি সদর হতে বাসযোগে ঢাকায় যায়। ভিকটিম’দ্বয় ঢাকায় পৌঁছার পরে মোবাইলে যোগাযোগ করে অভিযুক্ত সুমি চাকমা প্রকাশ হেলির সাথে। তিনি তাদেরকে ঢাকার উত্তরায় একবাসায় নিয়ে তাদের মোবাইল কেড়ে নেয় এবং সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে তাদেরকে ঘরে আটক করে রাখে। আরও জানা যায়, অভিযুক্ত’দ্বয় পরষ্পর পার্শ্ববর্তী জেলার এবং উদ্ধারকৃত অপরাপর ভিকটিমদেরও একই প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করার জন্য বিভিন্ন স্থান হতে এনে তাদের উক্ত বাসায় আটক করে রাখে।
অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা হতে ভিকটিমদেরকে চীনে নেওয়ার প্রলোভন দিয়ে তাদের পরিবারের অগোচরে ঢাকায় এনে তাদেরকে বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিজ ভাড়া বাসায় আটক করে রাখে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে পানছড়ি থানায় মামলা রুজু করা হয়। সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটিকে গ্রেফতারের জন্য ধৃত আসামীদ্বয়কে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে। এই চক্রে জড়িত অপারঅপার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য আমাদের চৌকশ আভিযানিক টিম কাজ করে যাচ্ছে।