পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য প্রত্যাহার করল ভারত

বাণিজ্য

ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে যে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া নিয়ম করেছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য প্রত্যাহার করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ভারত সরকার।ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেঁয়াজের ন্যূনতম এই মূল্য শিগগিরই কার্যকর হবে। এই মূল্য নির্ধারণের ফলে ভারত থেকে যেসব দেশ পেঁয়াজ আমদানি করে থাকে তাদের অনেকটাই সুবিধা দেবে। বাংলাদেশের জন্যও বিষয়টি ইতিবাচক হতে পারে।

অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ভারত একসময় পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে চলতি বছরের মে মাসে রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রপ্তানিমূল্য ৫৫০ ডলারে নির্ধারণ করে দেয়। এ ছাড়া রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে দেশটির সরকার।এদিকে পিটিআই জানিয়েছে, পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর আরোপ করা ৪০ শতাংশ শুল্ক অর্ধেক করে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের সূত্রে পিটিআই এ খবর দিয়ে বলেছে যে হ্রাসকৃত শুল্ক আজ শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।ভারতের এই দুই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য ছিল দেশটি থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি নিরুৎসাহিত করা। দিল্লির এই পদক্ষেপ ভারত থেকে রপ্তানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমাতে সাহায্য করে। কেবল জুন মাসেই ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি ৫০ শতাংশেরর বেশি পড়ে গেছে।

ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, জুন মাসে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি ৫০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। কারণ, প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম ৫৫০ ডলার রপ্তানি মূল্য এবং ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক ছিল। ফলে দেশটির পেঁয়াজ অন্যান্য দেশের পেঁয়াজের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ভারত থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানি করা হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ১৭ হাজার টন। ভারতে এপ্রিল থেকে অর্থবছর শুরু হয়।বিশ্বের অন্যতম প্রধান পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশ ভারত। বাংলাদেশসহ অনেক দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে। বাংলাদেশের আমদানিকারকেরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে আগ্রহী থাকেন। কারণ, প্রতিবেশী দেশটি থেকে দ্রুত পণ্য আনা যায় এবং বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের চেয়ে বেশি।

সর্বনিম্ন রপ্তানিমূল্য বাতিলের সিদ্ধান্তের কারণে ভারতীয় পেঁয়াজচাষিরা লাভবান হবেন। কারণ, তারা স্থানীয় বাজারের তুলনায় বেশি দামে বিশ্ববাজারে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারবেন।টাইমস অব ইন্ডিয়া বলেছে, মহারাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পেঁয়াজচাষিদের এই সুবিধা দেওয়া হলো। মহারাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকা। পেঁয়াজ রপ্তানি কমে যাওয়ার কারণে এই রাজ্যের চাষিরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন।ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, দিল্লি পেঁয়াজ রপ্তানির শর্ত কঠোর করার পর মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজচাষিরা ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন। তবে দেশটির সাধারণ নির্বাচনের আগে সরকার বাজারে পেঁয়াজের দাম কমিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর থাকা বিধিনিষেধ শিথিল করতে চায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *