৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে দেশের ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এই ধাপে ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তবে এই সংখ্যাটি ঠিক কত সেটা আগামীকাল জানানো যাবে বলে জানান সিইসি।
মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এখন চলছে ভোট গণনা। সন্ধ্যা নাগাদ ফলাফল আসতে শুরু করবে।
উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্বে ৩৬ শতাংশের মতো ভোট পড়ে বলে জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার ব্যাখ্যায় বলেছিলেন বৃষ্টি এবং ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কম। আজ এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সিইসি বলেন, ৩০ শতাংশের ওপরে ভোটার উপস্থিতিকে আমি সন্তোষজনক মনে করি না। তবে তিনি বলেন, এটা কমিশনের ব্যাপার নয়, রাজনৈতিক কারণে ভোটার উপস্থিতি কম। দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সংকট চলছে সেটা দূর হলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনে সহিংসতার তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে দু-এক জায়গায় হাতাহাতি হয়েছে। এসব ঘটনায় এক থেকে দুজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কিন্তু নির্বাচনকে ঘিরে উল্লেখযোগ্য সহিংসতা হয়নি। নির্বাচন মোটামুটি ভালো এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, ভোটের সময় বিভিন্ন অপরাধে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জাল ভোটের অপরাধে ১০ জনকে তাৎক্ষণিক কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ভোটগ্রহণ চলাকালে দুইজন অতিরিক্ত গরমে মারা যান জানিয়ে সিইসি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রশাসন খুব তৎপর ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য ছিল। এর মধ্যেও কোথাও কোথাও মিডিয়ার কিছু কর্মী আহত হওয়ার খবর আমরা শুনেছি। বিভিন্ন অনিয়মে যখন তারা সাহস করে ছবি তুলতে গিয়েছেন তখন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। তবে সঠিক তথ্য এখনো পাইনি। বিচ্ছিন্ন হাতাহাতির কারণে ৩৩ জনের মতো আহত হয়েছেন। এর মধ্যে এক থেকে দুজনের অবস্থা গুরুতর হতে পারে।
সিইসি জানান, দ্বিতীয় ধাপের ১৫৬ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তিন পদে এক হাজার ৮২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬০৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৯৩ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৯৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ষষ্ঠ উপজেলা ভোটে দেশের মোট ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার। পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় ভোট হয় ৮ মে। এসব উপজেলায় গড়ে ৩৬ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পড়ে।
এর মধ্যে প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২৪ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি; বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হবে। ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।