৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের মো. আল মামুন আমানত (৪১)। স্ত্রীকে বলে এসেছিলেন রাজধানীর শাহবাগে সরকার পতনের বিজয় মিছিলে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এরপর আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে ৯ দিন পর গত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে মামুনের লাশ পাওয়া যায়।
মামুন নারায়ণগঞ্জে একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী হাসিনা মমতাজ চিকিৎসক। এই দম্পতির দুই মেয়ে। একজনের বয়স সাত বছর, আরেকজনের এখনো দুই বছর হয়নি। মামুনের মা–বাবা বেঁচে নেই। এক বোন যুক্তরাষ্ট্রে, আরেক বোন থাকেন ঢাকায়। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে দেশে রওনা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বোন।
ময়নাতদন্ত শেষে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল থেকে মামুনের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার জালকুড়ি পশ্চিম পাড়ার বাসায়। গতকাল শুক্রবার জানাজা শেষে কুমিল্লার চান্দিনায় পারিবারিক কবরস্থানে মামুনের লাশ দাফন করা হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেশ সক্রিয় ছিলেন মামুন। ৫ আগস্ট এক পোস্টে তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে লিখেছিলেন, ‘পুরো বাংলাদেশ আজ মুক্তির দাবিতে একতাবদ্ধ।…এখন তারা মৃত্যুর ভয় ভুলে গেছে। যেকোনো অন্যায়, জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেয়ে গর্বের আর কী হতে পারে। এ আন্দোলনে অংশ নিয়ে স্বৈরাচারমুক্ত করে স্বাধীনতার জন্য কেউ জীবন দিলে সৃষ্টিকর্তা তার প্রতিদান দেবেন।’
৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করে হাসিনা মমতাজ বলেন, তাঁর স্বামী ওই দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে বেলা তিনটার দিকে বাসায় ফেরেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জানান, তিনি শাহবাগে যাচ্ছেন, বাসায় ফিরতে রাত হতে পারে। এরপর আর কোনো কথা হয়নি।