শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গণত্যার ঘটনা তদন্তে স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের তদন্তে জাতিসংঘকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে মঙ্গলবার দুপুরে জাতিসংঘের গুলশান অফিসে গিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের হাতে এ সংক্রান্ত আবেদন তুলে দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
পরে সংবাদিকদের ব্রিফিংকালে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে জাতিসংঘের কাছে আমাদের একটি আবেদন দিয়েছি। একটি অবৈধ সরকারের অধীনে বাংলাদেশে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, দেশের নাগরিকদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক মানের স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা উৎঘাটন করার জন্য আমরা জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি। আমরা জাতিসংঘের ঢাকা অফিসে যে চিঠি দিয়েছি। তারা সেটি জাতিসংঘে পাঠাবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, দেশের রাজনীতির ইতিহাসে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, গুম করা হয়েছে এটা উন্মোচন করার প্রয়োজন আছে। জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হলে, দেশের মধ্যে এবং দেশের বাইরে যে ঘটনার মাধ্যমে এই হত্যাযজ্ঞ করেছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সেটাকে জাতির সামনে, বিশ্বের সামনে আমাদেরকে তুলে ধরতে হবে। যাতে আগামী দিনে বাংলাদেশে কেউ এ ধরণের ঘটনা ঘটাতে সাহস না করে।
খসরু বলেন, ‘নিজের দেশের নাগরিকদের হত্যা করে জোর করে ক্ষমতায় থাকার যে আকাঙ্খা সেই আকাঙ্খা কারো যেন না হয়। আমরা জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য এই ধরনের একটা পরিচ্ছিন্ন ও একটি নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য তদন্তের কথা বলেছি। তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি। আমরা দেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারকেও বলেছি, জাতিসংঘকে বলার জন্য। জাতির এই ক্রান্তি লগ্নে এরকম একটি তদন্ত সকলের আকাঙ্খা, জাতির আকাঙ্খা বলে আমরা মনে করি।’আমরা যদি এসব ঘটনা ধরতে না পারি ভবিষ্যতেও স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় আসবে এবং দেশের মানুষকে গুম-খুন হত্যা করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে। আমরা চিরতরে এটার অবসান চাই। তাই আন্তর্জাতিক মানের ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে যে ঘটনা ঘটেছে তা উদঘাটনের জন্য জাতিসংঘকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, ‘যে গণহত্যা হয়েছে একটি সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় এজন্য এটার তদন্ত আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ স্বচ্ছ একটি তদন্তের প্রয়োজন আছে। তার মানে এই না যে, দেশের মধ্যে যে আইনি ব্যবস্থা সেটার সঙ্গে এটা সাংঘর্ষিক কিছু। কারণ, আমাদের আগে আইন বলে তো কিুছু ছিলো না। এখন সেটা আমরা ক্রমান্বয়ে ফিরে পাচ্ছি। দেশের অভ্যন্তরে যেটা হবে সেটা তো অন্য বিষয়। যে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে তা সারা বিশ্বের কাছে ঘৃণিত হয়েছে এবং সারা বিশ্ব এটার প্রতিবাদ করেছে। তাই আমরা মনে করি আন্তর্জাতিক মানের একটি স্বচ্ছ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা প্রয়োজন।’