জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি ব্যবসায়ীদের

Uncategorized

ঢাকা, ১২ আগস্ট, ২০২৪ (বস) : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের অপসারণের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
সোমবার রপ্তানিখাত সংশ্লিষ্ট ২৭টি ব্যবসায়ী সংগঠনের এক মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা এই দাবি জানান। তারা বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যান আগামীকালের মধ্যে অপসারিত না হলে সকল ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যানের কার্যালয় রাজস্ব ভবন ঘেরাও করা হবে। তাকে অব্যশই চলে যেতে হবে।
রপ্তানিমূখী নিটওয়্যার পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করছি। একইসাথে আমরা বলবো ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণ আপাতত স্থগিত রাখতে হবে। বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আপাতত এই উত্তোরণ বন্ধ রাখা প্রয়োজন।’
সভায় অংশগ্রহণকারি ব্যবসায়ীদের মতামত তুলে ধরে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছর আর্থিকখাতের তথ্য-উপাত্তকে ম্যানুপুলেট করা হয়েছে। এই ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যেসব নীতি গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলো এখন সংশোধন করতে হবে। এনবিআরের কর্মকর্তাদের দ্বারা বিগত সময়ে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এই হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং অব্যশই এনবিআরে সংস্কার আনতে হবে।
ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে আর কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করতে চান না বলে তিনি জানান।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণ অভ্যুত্থানের সময়ে বেশ কিছু কারখানা ভাংচুর ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব কারখানাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করতে চাই। আমরা সরকারের সহযোগী ভূমিকায় থাকবো।’ ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানান তিনি।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আওয়াল মিন্টু অভিযোগ করেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন দিয়ে এসেছে। বৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় ছিলো না, অথচ এমন একটা সরকারকে এভাবে সমর্থন করা কোনোভাবে সমীচীন হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সংগঠিত গণঅভ্যুত্থানে সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। আব্দুল আওয়াল মিন্টুৃ বলেন, জনপ্রতিনিধিত্বশীল নয় এমন সরকার আবার দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকলে অরাজকতা তৈরি হতে পারে। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এটি অত্যন্ত চমৎকার সিদ্ধান্ত মন্তব্য করে তিনি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আর কোনো চাঁদাবাজি দেখতে চাই না। বিগত সরকারের সময়ে ব্যবসায়ীরা যেভাবে চাটুকারিতা করেছে তাতে তিনি লজ্জিত বলে উল্লেখ করেন।
বিজিএমইএ’র পরিচালক শামস মাহমুদ শিল্প-কারখানায় নিরাপত্তা এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি আবুল কাশেম হায়দার, বিজিএমইএ’র সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, বাংলদেশ টেরি টাওয়েল ও লিনেন ম্যানুফেকচারাস্ এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সোহেল, বিজিএপিএমইএ’র সভাপতি মো. কাহরিয়ার প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *