বিএনপির সন্ত্রাসী তান্ডবে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি আতঙ্কে এলাকাছাড়া সাধারণ মানুষও

সারা বাংলা

ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পরপরই অস্থিরতা তৈরিতে মাঠে নেমেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগন্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নে বিএনপি
সুবিধাবাদী গোষ্ঠী। মাঠ প্রশাসন না থাকায় বিভিন্ন স্থানে হামলা, ডাকাতি, লুটপাট করার খবর পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে নেমেছে বিএনপির এই গোষ্ঠী, গত (৫আগষ্ট থেকে ৮ আগষ্ট) পর্যন্ত ধংসলিলা চালায়। এতে করে এলাকায় এলাকায় অস্থিরতা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী অনেকেই এলাকা ছেড়েছেন।

যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি ও টার্গেট হামলা ঠেকাতে কাজ করছে ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলো। দিনে-রাতে উভয় সময়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নিরাপত্তা দিলেও আতঙ্ক কমছে না। এদিকে ছাত্র জনতার সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মাঠ প্রশাসনে। সহাবস্থান নিশ্চিতে জেলায় জেলায় বিশিষ্টজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ছাত্র প্রতিনিধির সাথে শুরু হয়েছে বৈঠক।

প্রবল ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ঘটনার খবর ছড়িয়ে পরার পর পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলার শিবগন্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সড়কে বিএনপির নেতা কর্মীরা নেমে এসে উল্লাস করতে থাকে। এই সময়ে তারা ধংস শিলায় মত্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা যেমন ভাঙচুর করা হয়, তেমনি বিভিন্ন এলাকায় টার্গেট ব্যক্তিদের ওপর হামলা, বাড়িঘরে লুটপাট শুরু করে এক শ্রেণির বিএনপির সুবিধাভোগীরা । দোকান দখল, জমি দখল, ঘাট ও বাজার দখলের মতো ঘটনা ঘটতে শুরু করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগন্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নে এক বাসিন্দা বলেন, সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে এলাকার কিছু বিএনপির লোকজন আমাদের বসতঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটতরাজ করে। ঘরে যা কিছু ছিল সব নিয়ে যায়। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র নিয়ে যায়। আমার মা-বাবা ভয়াবহতা দেখে আত্মগোপনে গিয়ে প্রাণ রক্ষা পায়।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন ছিল। আন্দোলনের মাঠেও ছিলাম। তারপরও বিএনপির কিছু লোক আমাদের বাড়িতে লুটপাট চালায়।

তিনি বলেন, হামলা-লুটপাটে পূর্ব বিরোধের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের রয়েছে। এরসঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আগে যার সাথে যে বিরোধ ছিল সেই শোধ নিতে টার্গেট হামলা করা হচ্ছে, বিভিন্ন গ্রামে  হামলা  চালিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গোড়াউন লুটপাট ,বাড়ি ঘর ভাংচুর , চুরি , ছিনতাই ,লুটতরাজ করে আনুমানিক দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে বাসিন্দাদের বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হামলাকারীরা লুটে নিয়েছে ১৬টি বাসাবাড়ির ঘরের দরজা জানালাসহ নিরীহ মানুষের বিভিন্ন মালামাল । ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাসিন্দা জানান, আমাদের একেবারে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছিলো। পরে যে যেভাবে পারছি পালায়ছি। আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। সকালে এসে দেখি ঘরের দরজা জানালাও ভেঙে নিয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো এখন মাথা গোঁজারও ঠাঁই নেই। একই অভিযোগ করে আরও কয়েকজন জানান, কিছু রাখা হয়নি সব নিয়ে গেছে। বিএনপির লোকজন ভাঙচুর ও লুটপাট করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। যারা ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার সাথে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে প্রশাসনের নিকট যথাযত বিচার দাবী করেন।

যেসব বাড়িতে বিএনপি ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছেঃ- ১. টমাস, পিতা গোলাম মর্তুজা গ্রাম বিশ্বনাথপুর (বাড়ি ভাংচুর) ২.মোহা মকিম মাস্টার (দোকান লুটপাট ও বাড়ি ভাংচুর)/গ্রাম মকারিমটোলা ৩. রবু (বাড়ি ভাংচুর)/গ্রাম বেগুন বাড়ি ৪.হামদুল(বাড়ি ভাংচুর ও রাইস মিল লুটপাট)/গ্রাম কালিগঞ্জ ৫.জারমান (বাড়ি ভাংচুর/গ্রাম ক্যাপড়াটোলা ৬.রুবেল /গ্রাম খলিফা পাড়া ৭.শাজাহান /গ্রাম পোড়াটোলা ৮.শফিকুল ইসলাম ভাদু/গ্রাম বিশ্বনাথপুর ৯.রশিদ মেম্বার /গ্রাম খলিফাপাড়া ১০.সেলিম /গ্রাম বিশ্বনাথপুর ১১.সেন্টু/গ্রাম বিশ্বনাথপুর ১২.সাদ্দাম /গ্রাম বিশ্বনাথপুর ১৩.আজম/ বিশ্বনাথপুর বাখোআলী বাজার ১৪.আকবর /গ্রাম ৬ ঘড়িয়া ১৫.নিউটন ডাক্তার /গ্রাম বিশ্বনাথপুর ১৬.আতাউর রহমান /গ্রাম রহমতটোলা ।
সকলের ইউনিয়ন বিনোদপুর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্বনাথপুরের এক বাসিন্দা জানান, আমাদের একেবারে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছিলো। পরে যে যেভাবে পারছি পালাইছি। আসবাপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। সকালে এসে দেখি ঘরের দরজা জানালাও ভেঙে নিয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো এখন মাথা গোঁজার জায়গা নেই। একই অভিযোগ করে আরও কয়েকজন জানান, কিছু রাখা হয়নি সব নিয়ে গেছে। আমরা এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিনোদপুরের আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেনঃ হামলা-লুটপাটে পূর্ব বিরোধের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের রয়েছে। বিএনপির লোকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গোড়াউন লুটপাট ,বাড়ি ঘর ভাংচুর , চুরি , ছিনতাই ,লুটতরাজ করে আনুমানিক দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এমনকি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে বাসিন্দাদের বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।যারা ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার সাথে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে প্রশাসনের নিকট যথাযত বিচার দাবী করেন।

উক্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সাজ্জাদ হোসেনকে মুঠোফোনে জিজ্ঞেস করলে তিনি দৈনিক বঙ্গ সংবাদকে জানান বর্তমানে শিবগঞ্জ উপজেলার পরিস্থিতি একেবারেই শান্ত রয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা আর ঘটছে না। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো আছে ।পরবর্তীতে সুষ্ঠ তদন্ত করে অপরাধীদেরকে আইনের আওতায় নেয়া হবে।
জেলার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পুলিশ সুপারের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *