১৯৯৫ সালে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়ে গত ৩০ বছরে সীমাহীন দুর্নীতি, নিয়োগ বানিজ্য,শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করা, শিক্ষার্থীদের প্রতি কর্তব্য অবহেলা করেছেন এমন অভিযোগ এনে গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সকল শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একত্রিত হয়ে সহকারী শিক্ষকরাও আন্দোলন অংশগ্রহন করেন। পরে আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষককের পদ থেকে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেন আব্দুর রউফ।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আশ পাশের সব বিদ্যালয়ে ভর্তি ফি ৩৫০ টাকা আমাদের বিদ্যালয়ের সেশন ভর্তি ফি ৭৫০ টাকা প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক অপমান করেন। আমাদের বিদ্যালয়ে পানি খাওয়ার ব্যবস্থা নাই। ওয়াসরুমের তালা দেওয়া থাকে বাহির একটা নষ্ট ওয়াসরুমে যেতে হয়। কম্পিউটার শিক্ষক থাকলেও ৮ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার নাই। প্রধান শিক্ষক আমাদের ক্লাস মনিটরিং করেন না।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিনজহাজুল হক বলেন, আমি শিক্ষক প্রতিনিধি হিসাবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে আছি। আমাদের পূর্বের কমিটির শেষ সময় আমরা ৩টা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তী দেওয়া ছিলো। সেই নিয়োগ বর্তমান কমিটির মাধ্যমে দিবে সেখানে তার নিজের ভাই সাবেক চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে দিবে এমন প্রস্তাব বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের বলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের ভাইকে সভাপতি হিসাবে কেউ নিতে রাজি না হওয়ায় সে আমাদের দুইজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেন। তার ভাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় সে সব সময় অহংকারী ভাব নিয়ে থাকেন। কারন অকারনে সহকারী শিক্ষকদের খারাপ আচরণ করে থাকেন।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক শফিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমার হাতে নিয়োগ পেয়েছে। আমি তার সিনিয়র শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ এই বিদ্যালয়ে ১৯৯৫ সালে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান। নিয়োগ পাওয়া প্রায় ৩০ বছর হয়ে গেলে আজ পর্যন্ত সে বিদ্যালয়ের কোন ক্লাস নেননি। আজ থেকে ৮ বছর আগে তার নিজের শেলককে বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন। নিয়োগের ১ বছর পর আমাদের বিদ্যালয়ের ২টি ল্যাপটপ নষ্ট হয়ে যায়। যা ৭ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলে আজ পর্যন্ত ঠিক করে নাই।
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক কথায় কথায় আমার গায়ে হাত তোলেন। সেশন ফি,পরিক্ষার ফি তিনি তার নিজের কাছে রাখেন। তার হিসাব আমাকে দেয় না। কিছু বলতে গেলে সে আমাকে চাকুরিচ্যুত করবেন বলে হুমকি দেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ের হিসাব সব তার কাছে। সেই জানে কোথায় কি আছে।