লালমনিরহাটের হাতীবান্ধর সনাতন ধর্মালম্বীরা ভারতে যেতে চাইছে

জাতীয়

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বসত ভিটেসহ সব ফেলে রেখে ভারতীয় সীমান্তে অবস্থান করছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষরা। শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে উপজেলার গোতামারী সীমান্তে জড়ো হতে থাকে তারা। পরে খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে ভারত ও বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।জানা গেছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করার পর সারা দেশের ন্যায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দূর্বৃত্তরা। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা রাত জেগে পাহাড়া দিলেও প্রতিদিন কোথাও না কোথাও বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের করছে দূর্বৃত্তরা। আর সেই কারণে শুক্রবার সীমান্ত দিয়ে ভারত চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন হাজার খানেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকালে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গোতামারী সীমান্তে ভারতীয় কাঁটাতার এলাকায় ভীর জমিয়েছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। তারা কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা দেয়। এরপরও ভারতে যেতে কাঁটাতারের পাশে অবস্থান করেন তারা। এদিকে তাদের ঘরে ফেরাতে চেষ্টা করেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্কলা বহিনী ও বিএনপি জামাতের নেতারা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ও পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় এক যুবক মানিক চন্দ্র বলেন, ‘ভারতে আশ্রয় নিতে সীমান্তে জমায়েত হয়েছি। কিন্ত আমরা যেতে পারছি না। প্রতিনিয়ত আমাদের ওপর হামলা করছে। কেন আমাদেরকে রাত জেগে পাহাড়া দিতে হবে। তাই আমরা ভারত চলে যেতে চাই।

এ সময় সুবল চন্দ্র নামের অপর একজন বলেন, ‘শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর থেকে দূর্বৃত্তরা দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করছে। তাই আমরা সব ফেলে রেখে বাধ্য হয়ে ভারত চলে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্ত আমাদেরকে ভারত যেতেও দেওয়া হচ্ছে না। আমরা হিন্দু বলে না কি আওয়ামী লীগ করি।’

এসময় এমপি প্রার্থী ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকদের সঙ্গে দেখা করে বলেন, আমরা আপনাদের সাথে আছি এবং থাকবো। আপনাদের জানমালের নিরাপত্তা দিবো। আপনারা ভীত হবেন না। আগে যেমন হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই হয়ে একসঙ্গে বাস করছিলাম ভবিষ্যতেও একসঙ্গে থাকবো।

হাতীবান্ধা থানার ওসি (তদন্ত) নির্মল চন্দ্র মোহন্ত বলেন, ‘সীমান্তে গুজব ছড়িয়েছিল ওদিক দিয়ে না কি ভারত যাওয়া যাবে। তারা ওখানে জড়ো হয়েছিল। পরে বিজিবি তাদেরকে সরিয়ে নিয়ে আসে।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে বিষয়টি বিজিবি দেখছে। সেখানে আসা লোকজনদের সঙ্গে তারা কথা বলতেছেন। এছাড়া সীমান্তে আসা লোকজনও সেখান থেকে ফিরে আসতে শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *