ময়মনসিংহে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা প্রভাবশালী পেসকার সামিউল হক মিঠু’র বিরুদ্ধে মানববন্ধন

সারা বাংলা

গোলাম কিবরিয়া পলাশ  ময়মনসিংহ :
মিথ্যা মামলা, হামলা ও হয়রানিসহ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছে রফিকুল ইসলাম ও পেসকার সামিউল হক মিঠু। তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় নিজের পরিবারের সদস্যরা সহ স্থানীয় লোকজনদের উপর বিভিন্নভাবে হয়রানি সহ অত্যাচার করে আসছে। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ নিজ দাদী, ‘ চাচা ও চাচাতো ভাই সহ এলাকার স্থানীয় লোকজন।

জানা গেছে, শনিবার (০৬ জুলাই ২০২৪) তারিখ বিকাল সাড়ে ৫ ঘটিকায় মুক্তাগাছা কুমারগাতার লিচুতলা বাজারে শত শত মানুষজন একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে জেলা ও দায়রা জজের পেসকার সামিউল হক মিঠুকে নানান অভিযোগ তুলে বক্তব্য প্রদান করে। সকলের দাবী দ্রুত গতিতে পেসকার সামিউল হক মিঠুকে আইনের সঠিক তদন্ত করে না আটকালে সে গ্রামের নিরীহ মানুষজনকে বিটে-মাটি ছাড়া করে পঙ্গু করে ছাড়বে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রভাবশালী হওয়ার সুবাদে সামিউল হক মিঠু এলাকায় ও স্থানীয় প্রশাসনের উপর প্রভাব বিস্তার করে আদালতে একের পর এক মামলা করিয়ে তার পরিবারের লোকজনদের হয়রানি করে। এমনকি জামিনের নামে বিভিন্ন লোকের সাথে চুক্তি করে জামিন করিয়ে গত প্রায় ২ বছরে কোটি কোটি টাকা সহায় সম্পত্তি করেছে।

ভুক্তভোগী শামসুল হক ছাড়াও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধনে বক্তব্যে বলেন, জেলা ও দায়রা জজে চাকুরি করে রাতারাতি এতো অর্থ সম্পদের মালিক কি করে হলেন সামিউল হক মিঠু? এর প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী মাননীয় আইন মন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। সামিউল হক মিঠু মূলত বিরোধের সৃষ্টি করেন নিজ পরিবার থেকে। পারিবারিক জমি-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জন্ম দিয়ে তিনি স্থানীয় মসজিদের বিরোধ সৃষ্টি করেছেন। এনিয়ে তার চাচা রফিকুল ইসলামকে দিয়ে একাধিক মামলা করিয়ে তার বাবাকে সাক্ষী বানিয়ে রাখেন।

বক্তারা আরও বলেন আমরা সহ এলাকার কোন জনসাধারণ তাদেরকে পছন্দ না করায় তাদের সাক্ষী পর্যন্ত করাতে পারেন না। পারিবারিক ভাবে তার বোনকে ছাড়িয়ে তার বোন জামাইয়ের চাকুরিচ্যুত করেছেন। সে তার ভাইকে স্ত্রী ছাড়া করে ফের আরেক বউ ঘরে তুলেছেন। সে নিজের স্ত্রীকে দীর্ঘদিন বাবার বাড়ি রেখেছিলেন। এখন ভাইয়ে ভাইয়ে মামলা করিয়ে পারিবারিক হানাহানির সৃষ্টি করে রেখেছেন। এখানে সে জেলা ও দায়রা জজের আদালতে চাকুরি করার প্রভাব দেখিয়ে এতোসব করছেন বলে এলাকার বহু লোকজন জানিয়েছেন।

সামিউল হক মিঠুর সাথে একই পরিবারের চাচার সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়
সতেরো শতাংশ জমি নিয়ে। মিঠুর বাবা আব্দুল গনী ২ লাখ ৬২ হাজার টাকায় তার সহোদর ভাই শামছুল হকের সাথে বায়না করেন। এই জমি আজও লিখে দেয় নাই। এ নিয়েই গত দুবছর ধরে বিরোধ চলছে। ইতিমধ্যে সামিউল হক মিঠু জেলা ও দায়রা জজের পেসকার হয়েছেন। পারিবারিক ভাবে সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক ঘটনা ও মামলা। অভিযোগ রয়েছে, এসকল মামলা তিনি করাচ্ছেন তার চাচাকে দিয়ে। আর নিজের বাবাকে করছে সাক্ষী।

পারিবারিক জমিবন্টনেও করেছেন বৈষম্য। মামিউল হক মিঠু জেলা ও দায়ারা জজের পেসকার হওয়ার পর প্রথম মামলার সৃষ্টি হয় ২০২৩ সনে। ময়মনসিংহ ১ নং সিআর আমলি আদালত মামলা নং ১৪৩০/২০২৩। এর পরে ৩১ মে সন্ধ্যায় লিচুতলা বাজারে সামিউল হক মিঠু, তার বাবা ও চাচা রফিকুল ইসলাম ডেগার নিয়ে চাচা শামছুল হককে আঘাত করতে চাইলে জনরোধে শামছুল হক রক্ষা পায়। যা মুক্তাগাছা থানার জিডি নং ১৫৫৭ তাং ৩১ মে /২০২৪। এর আগেও মামলা করেন তার পক্ষে থাকা চাচা রফিকুল ইসলাম। মুক্তাগাছা সিআর আদালত মামলা নং- ৪৬১/২০২৪।

এর কয়েকদিন পর আরেকটি মামলা করেন দ্রুত বিচার আদালতে । যার নং ৩০/ ২০২৪ । তিনি সব মামলা করান কোর্টে। কোর্টে মামলা করানোর রহস্যও বুঝা কঠিন বলে এলাকাবাসী মনে করেন। এদিকে পেসকার সামিউল হক মিঠুর দাদী হাজেরা খাতুন যার বয়স ১০০ বছর উপরে। তিনি এ সকল বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আজ যে মানববন্ধন হয়েছে এতে বক্তারা সহ আমার ছেলে শামসুল হক যা বলেছেন সমস্ত ঘটনাই সত্য। এমনকি আমাকেও বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায় এ রফিকুল ইসলাম ও সামিউল হক মিঠু। এদের অত্যাচারে আমি সহ আমার পুরো পরিবার অতিষ্ঠ। এরা আমার স্বামীর নাম সহ বংশ পরিচয়টা ডুবাতে চলেছে।

এ সকল ব্যাপারে ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজের পেসকার সামিউল হক মিঠুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এসকল মামলায় প্রভাব বিস্তার করার কোন কারণ নাই। তিনি এসকল মামলায় প্রভাব বিস্তার ও তদবির করেন না বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *