ভোলায় পরিত্যক্ত ভাঙা কাঁচে তৈরি হচ্ছে কাঁচের চুড়ি

জাতীয়

ভোলা, ২৭ জুলাই, ২০২৪ (বস): জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পরিত্যক্ত ভাঙা কাঁচের টুকরো দিয়ে  কাঁচের চুড়ি তৈরি করা হচ্ছে। ফেলে দেওয়া ভাঙ্গাসহ, বিভিন্ন বোতল ভাঙ্গা, নানান ধরনের ফেলে দেওয়া ভাঙা কাঁচের টুকরো দিয়ে হচ্ছে বাহারি ধরনের চুড়ি। উপজেলার টবগী ইউনিয়নের নতুন হাকিমুদ্দিন বাজার এলাকায় উদ্যোক্তা আফজাল হোসেন ও বাদল মিয়া গড়ে তোলেন  কাঁচের চুড়ির এ কারখানা। বর্তমানে এখানে প্রায় ১৬ থেকে ১৮ জন কর্মচারী কাজ করছেন। তবে ঈদের মৌসুমে তাদের কাজের চাপ বেশি থাকে। তখন এর দ্বিগুণ কর্মচারী কাজ করে।
চুড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামাল হিসেবে  অব্যবহৃত  কাঁচ ঢাকা ও স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া ভোলার কয়েকটি স্থান থেকেও এ চুড়ি তৈরিতে  ভাঙা  কাঁচ সংগ্রহ করা হয়। কারখানায় গ্যাস ব্যবহার করে বিশাল একটি চুল্লীতে আগুন জ্বালিয়ে এসব  কাঁচ গলানো হয়। পরে মেশিনের সহায়তায় তৈরি করা হয় লাল, নীল, হলুদ, সবুজসহ হরেক রংয়ের  কাঁচের চুড়ি। এর পর ঢাকায় নিয়ে তাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে  চুড়িগুলোকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। এর পর তা বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজারে বাজারজাত করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মোঃ আওলাদ হোসেন বাসস’কে জানান, ঈদের সময় দুই শিফটে  কাজ হলেও বর্তমানে এক শিফ্টে কাজ চলছে। সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কাজ হয় এখানে। এছাড়া দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ ব্রুজ চুড়ি তৈরি করা হয়। প্রতি ব্রুজ চুড়ির দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের।
তিনি আরো জানান, চুরি তৈরীর কারিগরদের অন্য জেলা থেকে নিয়োগ দিলেও প্রায় অধিকাংশ শ্রমিক স্থানীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রত্যেক শ্রমিককে দৈনিক ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি দেয়া হয়।
চুড়ি তৈরিতে কাজ করা নারী শ্রমিক স্থানীয় বাসিন্দা রাবেয়া বেগম ও নাসরিন আক্তার বলেন, তারা প্রতি ব্রুজ চুড়ি থেকে ১০ টাকা করে পান। সেই হিসেবে দৈনিক প্রায় ৪০ ব্রুজ থেকে ৪০০ টাকা করে ইনকাম হয় তাদের। অপর নারী শ্রমিক শাহানুর বেগম বলেন, তিনি মাসিক ৮ হাজার টাকা বেতন পান। এতে করে তার পরিবারে বাড়তি আয়ে স¦চ্ছলতা ফিরে এসেছে।
জেলা বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক এস এম সোহাগ হোসেন বাসস’কে বলেন, ফেলে দেওয়া ভাঙা কাঁচ দিয়ে কাঁচের চুড়ি তৈরি একটি ভালো উদ্যোগ। এতে করে উদ্যোক্তারা একদিকে পরিবেশের  ভারসাম্য রক্ষা করছে অন্যদিকে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করছে। সরকারিভাবে এসব উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *