বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের আলোচনার প্রেক্ষিতে ৪৭ দিন পর বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে রেলপথে আমদানি-রপ্তানি।
সড়কপথের পাশাপাশি রেলপথে ভারতের সঙ্গে বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় পণ্য আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে গত ১৯ জুলাই থেকে দুই দেশের মধ্যে রেলে পণ্য পরিবহন ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালিন সরকার ব্যবস্থাপনায় দেশ স্বাভাবিক হলে ৮ আগষ্ট থেকে বেনাপোলের সাথে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়।
এদিকে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাণিজ্য ও যাত্রী চালুর দাবিতে ভারত সরকারের রেল কর্তৃপক্ষকে গত ১২ আগস্ট চিঠি দেয়। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে সাড়া না দেওয়ায় দেশে বাণিজ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি আমদানি নির্ভর ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। একপর্যায়ে ভারত সরকার ৪৭ দিন পর রেলপথে পণ্য পরিবহন সেবা চালু করেছে।
আমদানিকারক মামুন হোসেন বলেন, ব্যবসার কাজে প্রায়ই ভারত যেতে হয় ব্যবসায়ীদের। ভিসা বন্ধ থাকায় ভারতে যাতায়াতে অসুবিধায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বেনাপোল দিয়ে রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধের ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েন। পুনরায় এ বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বেনাপোল আমদানি রপ্তানি কারক সমিতির সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বকুল জানান, এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেলপথে পাথর, জিপসাম ও সিমেন্ট তৈরির সামগ্রী আমদানির পাশাপাশি এখন গার্মেন্টস, কেমিক্যাল, মোটর গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। ভারতের কলকাতা থেকে সড়কপথে পণ্য পরিবহনে ৫-৭ দিন লেগে যায়, সেখানে রেলপথে ৩-৪ ঘণ্টায় বেনাপোল বন্দরে পণ্য পৌঁছায়। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের জন্য বিজনেস ভিসা চালু করা হলে বেনাপোলের সাথে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি রপ্তানি বাড়বে পাশাপাশি যে কোন উদ্ভুত সমস্যা দ্রুত নিরসন করা সম্ভব হবে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, বেনাপোল দিয়ে রেলপথে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহন চালুর জন্য গত মাসের ১২ আগস্ট ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এরপর এ মাস থেকে পুনরায় রেলপথে পণ্য আমদানি-রপ্তানি চালু হয়েছে।