ধর্মীয় স্থাপনা ভাংচুরের প্রতিবাদে ঢাবিতে একতাবন্ধন নামে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

জাতীয়

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজার ও বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনায় হামলার প্রতিবাদে একতাবন্ধন নামে মানববন্ধন করেছে একতার বাংলাদেশ। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন থেকে বক্তারা যারা মাজার ও ভিন্ন ধর্মালম্বীদের ওপর হামলা করছে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে দাবি জানান।

মানববন্ধনে একতার বাংলাদেশের মুখপাত্র তাহমিদ আল মুদ্দাসিসর চৌধুরী বলেন, বর্তমানে মজার হামলাই ভবিষ্যতে ইসলামফোবিয়া তৈরির অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসবে বলে উল্লেখ্য করেন। পাশাপাশি এই ভাঙচুরের বিপরীতে সাধারণ মানুষের এমন নীরব অবস্থানের কারণ হিসেবে তিনি বিভিন্ন গল্প-সাহিত্যে মাজার প্রথাকে বিকৃত ও নগ্নভাবে বর্ণনা করার বিষয়টিকে দায়ী করেন। যারা উপাসনালয়ের উপর হামলা করে তাদের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাফী মো. মুস্তফা বলেন, বাংলাদেশের ইসলামের সঙ্গে সুফিবাদের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ১৮৭২ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলা ভূখণ্ডে মুসলমানদের সংখ্যা ৪৮ শতাংশ ছিল। একই সময়ে মুসলিম শাসনাধীন দিল্লিতে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল ১১ শতাংশ। এর দ্বারা ক্ষমতা কিংবা তরবারির জোরে যে ইসলাম প্রসার লাভ করে না তা স্পষ্ট হয়ে যায়। নিপীড়ন কোনো বিষয়ে সমাধান দিতে পারে না। কারো ভুল থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করার আহবান জানান তিনি।

বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের আরেক সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহা. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, স্রষ্টা নিজেই বহুত্ববাদ সৃষ্টি করেছেন। সুফিদের উদারতা, সবার প্রতি সহনশীলতা মানুষকে মুগ্ধ করেছে। তাই মানুষ দলে দলে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে।  আল্লাহ আমাদের নানা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্রে বিভক্ত করেছেন। এটাই স্রষ্টার সৃষ্টির বৈচিত্র্য। এই বিধানকে অস্বীকার করা মানে স্রষ্টাকে অস্বীকার করা ভিনদেশী মানুষরা আমাদের কাছে ইসলাম ও কুরআন নিয়ে এসেছিল। এই ধর্মগ্রন্থের ভাষা এবং বোধগম্যতা সাধারণ মানুষের মাঝে ছিল না। ভাষাগত দক্ষতা না থাকা সত্ত্বেও কোন ম্যাসেজ ও মোটিভেশান থাকলে এ ভূখণ্ডের সাধারণ মানুষ বাপ-দাদার মত এবং বিশ্বাসকে পরিবর্তন করেছিলো? এটা আমাদে ভাবার বিষয়।একতাবন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন ফয়সাল। তিনি বলেন, মাজার ভাঙার কাজে ধর্মপ্রাণ মানুষ জড়িত নয়, আলেমরা জড়িত নয়। কিছু অতিউৎসাহীরা এসব কাজ করছে। তারা বহির্বিশ্বের কাছে নেতিবাচক ম্যাসেজ দিচ্ছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তি ধর্মীয় বিভাজন করতে চক্রান্ত করছে। তিনি সবাইকে মিলে সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *