গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে একটি মাদ্রাসার নৈশ প্রহরীর কোটি কোটি টাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দশ একর জমির বিশাল মাছের খামার ও দোতলা বাড়ী রয়েছে। ওই নৈশ প্রহরী আওয়ামী লীগের আমলে অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িয়ে রাতারাতি বড়লোক বনে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নিজের পদকে পরিবর্তন করতে ঝরেছেন পৌর কাউন্সিলর পদে নির্বাচন। কিন্তু পরাজিত হয়েছেন। ওই নৈশ প্রহরীর নাম শহীদুল্লাহ শহীদ। তিনি ত্রিশাল কেন্দ্রীয় বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় ২০ বছর যাবত কাগজে কলমে কর্মরত থাকলেও তিনি নৈশ প্রহরী হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাদ্রাসা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ত্রিশাল পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের ত্রিশাল উজানপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত হাতেম আলীর ছেলে শহীদুল্লাহ শহীদ ২০০৪ সালে ওই এলাকায় অবস্থিত ত্রিশাল কেন্দ্রীয় বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় নৈশ প্রহরী হিসেবে চাকুরী নেন। শুরুতে নিয়মিত নৈশ প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও ধীরে ধীরে নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ত্রিশাল বাজারে তার টাইলস ও ফিটিংস এর ব্যবসার (মা এন্টার প্রাইজ) বিশাল শো-রুম রয়েছে। ত্রিশাল বাজারে রয়েছে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগের পাঙ্গাস মাছের খাদ্যের ব্যবসা। যে ব্যবসায় তার মূলধন কয়েক কোটি টাকা। ত্রিশাল পৌর এলাকায় দশ একর জায়গা ভাড়া নিয়ে করেছেন মাছের খামার। রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এই নৈশ প্রহরীর রয়েছে দাম্ভিকতা।
সে কাউকে পরোয়া করে না বরং তার মাদ্রাসার সুপার কে ধমক দিয়ে বসিয়ে দেন। মাদ্রাসায় না গেলেও মাসে এক-দুইদিন গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে ঠিকই বেতন উত্তোলন করেন। তার বিরুদ্ধে মাদ্রাসার সুপার কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি দায়িত্ব না পালন করলেও তার স্থলে তার বড় ভাই আতাউর রহমান নৈশ প্রহরী হিসেবে মাঝে মাঝে দায়িত্ব পালন করেন বলে সুপার দাবী করেন।
এ ব্যাপারে সুপার কথা বলতে রাজি না হলেও ত্রিশাল কেন্দ্রীয় বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মজিবর রহমান পরে জানান, সে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন না। হাজিরা খাতায় মাঝে মাঝে এসে স্বাক্ষর করেন। তার জায়গায় তার বড় ভাই আতাউর মাঝে মাঝে দায়িত্ব পালন করেন তাও নিয়মিত না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, সে আওয়ামী লীগ আমলে অবৈধ ব্যবসা করে রাতারাতি বড়লোক বনে গেছেন। হঠাৎ করেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন। লিভাবে এত তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়া যায় আমরা জানি না। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শহীদুল্লাহ শহীদ দাম্ভিকতার সাথে জানান, আমি দায়িত্ব পালন করি না। কেন করেন না বলতেই ক্ষেপে উঠেন এবং আমার জায়গায় আপনি দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ফোন কেটে দেন। এ ব্যাপারে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।