ত্রিশালে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে পিটিয়েছে কিশোর গ্যাং চক্র

সারা বাংলা

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে দুর্বৃত্তদের হামলা থেকে স্বামীকে বাঁচতে গিয়ে আহত হয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা এক নারী ও তার ছেলে । ত্রিশাল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয় রয়েল মিয়ার উপর হামলা করে এবং তার বাসায় ভাঙচুর চালানোর সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন।

গুরুতর আহত গর্ভবতী নারী মারুফা বেগমকে (২৮) ত্রিশাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

স্থানীয় ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাবু, রতন, আব্দুল জলিল ও তার দুই ছেলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং আমার নামে মিথ্যাচার করে। আর এসবের নেতৃত্ব দেয় স্থানীয় আব্দুল জলিল নামের এক ব্যক্তি।

ত্রিশাল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আকরামুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল হলো জুয়া ও মাদক কারবারিদের সরদার। তার দোকানে কোন মালামাল নেই। কিন্তু সারারাত খোলা রেখে মাদক বিক্রি করে এবং গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গার লোকজন এখানে আড্ডায় বসেন।

গর্ভবতী নারী ও তার স্বামী রয়েল মিয়া বিভিন্ন সময় আব্দুল জলিলের অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হন আব্দুল জলিল, কিশোর গ্যাং প্রধান বাবু মিয়া, তন্ময়, তোহা মিয়া, রতন মিয়া ও পারভেজসহ ১০-১২ জন। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা মারুফা বেগমকে তার স্বামী মো. রয়েল মিয়ার সামনেই অতর্কিত হামলা চালায়।

রয়েল মিয়া বলেন, “আমার সমন্ধি ভাইকে কয়েকদিন ধরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল হামলাকারীরা। আমি এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে আমাকেও হুমকি দেয় তারা। এরই অংশ হিসেবে দুপুরে তারা আমার ওপর হামলা করলে আমার স্ত্রী আমাকে বাঁচাতে এলে তাকেও আহত করে।

আহত মারুফা বেগম বলেন, “কিশোর গ্যাং প্রধান বাবু আমার বড় ভাইকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। পরে তারা বাড়িতে এসে তাকে খোঁজাখুঁজি করে। তাকে বাড়িতে না পেয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও হামলা করে। আমার স্বামীকে মারার সময় ফেরাতে গেলে আমাকে লাথি দেয় ও মারধর করেছে। এ ঘটনায় ত্রিশাল থানায় একটি মামলা হয়েছে। মারুফা আরও জানান, আমার রয়েল ও আমার আত্মীয়-স্বজনদের হুমকি দিচ্ছি। আমি এ বিষয়ে আরেকটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল জলিল বলেন, “আমি কোনোভাবেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমার সামনে বাবু ও রতন মারুফার ওপর হামলা করেছে। আমি এমনিতেই গভীর রাত পর্যন্ত দোকান খুলে বসে থাকি। অনেক সময় সিএনজি ড্রাইভাররা আসে আড্ডা মারে। আমি কোন মাদক বিক্রি করি না।

“অন্তঃসত্ত্বা নারীর ওপর হামলা হয়, সেটা অবশ্যই ন্যাক্কারজনক বলে জানান স্থানীয়রা । প্রকৃত হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, “অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে। মারধরের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *