তালা ভেঙে হলে উঠলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

সারা বাংলা

তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বিকেল সোয়া চারটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা মীর মশাররফ হোসেন হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।

আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে হলে প্রবেশের বিষয়ে একটি মতবিনিময় সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে যান এবং হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে ছাত্রীদের আবাসিক হলের দিকে গেছেন তালা ভাঙার জন্য।

এরপর ফজিলাতুন্নেছা হল, রোকেয়া হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল, প্রীতিলতা হল, সুফিয়া কামাল ও শেখ হাসিনা হলের তালা ভাঙা হয়। তবে হলগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হওয়ায় আজ তাঁরা হলে অবস্থান করবেন না বলে জানিয়েছেন। আগামীকাল শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লে বাকি হলের তালা ভেঙে হলে ঢুকবেন তাঁরা। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে সময় বেঁধে দেন। প্রশাসন এ সময়ের মধ্যে হল না খুলে দিলে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই হল খোলার ব্যবস্থা করবেন বলে ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ হলের তালা ভাঙেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৭ জুলাই দেশে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। একই সঙ্গে ওই দিন বিকেল চারটার মধ্যে ১৮টি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তখন শিক্ষার্থীরা নতুন প্রশাসনিক ভবনে সিন্ডিকেট সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। তাঁদের উদ্ধার করতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছররা গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে সাংবাদিকসহ দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি সায়েদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘হলের তালা ভাঙার বিষয়টি আমি জানি না। আমি সাভারের একটি হাসপাতালে রয়েছি। ওরা (শিক্ষার্থী) গতকাল হয়তো একটা আল্টিমেটাম দিয়েছিল, সেটা তো প্রশাসনের ব্যাপার।’

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. নূরুল আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর শাখার অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, প্রশাসন তাঁদের যৌক্তিক আন্দোলন থামাতে তড়িঘড়ি করে হলগুলো বন্ধ করে দেয়। মাত্র চার ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন হল ছাড়ার জন্য। সেদিন সব শিক্ষার্থী এই অল্প সময়ে হল ছাড়তে পারেননি। ওই দিন বিকেলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচার গুলি নিক্ষেপ করে। সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের থাকার জায়গা নেই। ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অনেকে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। সেখানেও পুলিশ হয়রানি করেছে। এই হয়রানি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য হল খোলার জন্য তাঁরা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেনি। যার কারণে তাঁরা হলের তালা ভাঙতে বাধ্য হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *