নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাভার দাফনের তিন বছর এক মাস ১২ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর। গত ৮ অক্টোবর ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের বিচার শাখা থেকে দেওয়া নির্দেশে বুধবার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুরের জালালাবাদ এলাকায় অবস্থিত জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন ঢাকা মাদরাসার কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। বিষয়টির তত্ত্বাবধানে থাকেন সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম রাসেল ইসলাম নূর।এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরীর রিট আবেদনের শুনানি শেষে তার লাশ কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মাহবুবুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এসময় সেখানে ঢাকা জেলা পুলিশ, পুলিশর ক্রাইম সীন ইউনিট সিআইডি ও ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তা ও হারিছ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকার জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আশিকুর রহমান কাশিমী বলেন, ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তার এক পরিচিত লোক ইকবাল মাসুম বলেন, মাহমুদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তারা মাদ্রাসায় দাফন করতে চান। পরের দিন আছরের নামাজের পর দুটি গাড়ি যোগে তার লাশ মাদ্রাসায় নিয়ে আসেন তারা। এসময় পরিবারের পাঁচ থেকে ছয়জন সদস্য ছিলেন। পরে মাদ্রাসায় জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
এসময় তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকাও দেওয়া হয় মাদ্রাসায়। পরে বছর দুইয়েক আগে দেশের একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় রিপোর্টে প্রকাশিত হয় মাহমুদুর রহমান নাম পরিচয় গোপন করে সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর লাশ দাফন করা হয়েছে। এনিয়ে তখন দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয় এক ধরণের। পরে সম্প্রতি হারিছ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তার লাশ উত্তোলন করার জন্য আদালতে আবেদন করলে আদালত সম্প্রতি ঢাকা জেলা প্রশাসনকে তার লাশ উত্তোলন করার নির্দেশ দেন। পরে মঙ্গলবার তার লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় তার লাশ সুরতহাল করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য লাশ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। তবে ফরেনসিক বিভাগের রিপোর্টের পর তার লাশ কোথায় দাফন করা হবে তা বলতে পারেনি তিনি।উল্লেখ্য, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামী ছিলেন হারিছ চৌধুরী। হারিছ চৌধুরীর বাড়ি ছিলো সিলেটের কানাইঘাটের দর্পন এলাকায়।