নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈষম্য বিরোধী জুলাই আগস্ট এর ছাত্র জনতার উত্তাল আন্দোলনের সময়” উত্তারার দায়িত্বপ্রাপ্ত এডিসি আরিফুল ইসলাম মিঠু এখনো রয়েছেন সংবাদ শিরোনামে।
তার সাবেক কর্মস্থল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র মিরপুর পুলিশ বিভাগের ডিসি জসীমউদ্দীন গ্রেফতার হলেও রহস্যজনক কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে পল্লবী জোনে’র সাবেক এডিসি (বর্তমানে উত্তরা জোনের এডিসি) আরিফুল ইসলাম ( মিঠু)।
ডিএমপির ডিবি উত্তরা বিভাগে ৫ ই আগস্ট এর পূর্বে ও পরবর্তীতে দায়িত্বে থাকা এডিসি আরিফুল ডিবি হারুনের হাজারো কুকর্ম বাস্তবায়নকারী অফিসার হিসেবে বরাবরই থাকতেন অফিসারদের নেকনজরে। মোটাদাগে এডিসি আরিফুলের প্রকাশ্য অপরাধের মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন ছিলো ”নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ”। যা প্রত্যক্ষ করেন অত্র অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ।
ডিএমপির ডিবি প্রধান থাকাকালীন সময়ে ডিবি হারুন নিজেকে শেখ হাসিনার কাছের মানুষ ও তিনি একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিতেন গর্বের সাথে। এছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি তার এলাকার মানুষ হওয়ার সুবাদে সেই পরিচয়টাও ছিলো ডিবি হারুনের জন্য মারাত্মক আশীর্বাদ।
ডিবি হারুন ও ডিসি জসিমউদ্দিনের হুকুমের গোলাম ছিলেন এডিসি আরিফুল। জনশ্রুতি আছে এদের হুকুম তামিল করতে এডিসি আরিফুল কখনো দুবার ভাবতেন না। যতোবড়ো গর্হীত অপরাধই হোকনা কেনো তা পালন করতেন হাসিমুখে ডিউ টাইমের আগেই। ডিবি হারুনের নির্দেশে এডিসি আরিফুল ইসলাম( মিঠু) ঢাকা সিটিতে জামাত-বিএনপি’র নেতাকর্মীদের তালিকা করে গ্রেফতার করতেন বলে অসংখ্য অভিযোগ আছে।
মিরপুর পুলিশ বিভাগের ডিসি জসিমউদ্দিন ও ডিএমপির ডিবি প্রধানের মূলত: সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন এই এডিসি আরিফুল ইসলাম মিঠু।
কলেজ ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের ভয়ঙ্কর ক্যাডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে জানা যায় ।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এর হাওরে বাড়ি হওয়ার সুবাদে ছাত্র জীবনেই ছাত্র রাজনীতির ময়দানে বিরোধীদলীয় ছাত্র আন্দোলন দমনে মাত্রারিক্ত হিংস্রতা দেখিয়ে ছাত্র জীবনেই আরিফুল ইসলাম মিঠু হয়ে উঠেন শেখ হাসিনাসহ শীর্ষতম আওয়ামী নেতাদের প্রিয়জন।
ছাত্রলীগ করার সুবাদে শেখ হাসিনার মদতপুষ্ট আরিফুল দলীয় কোটায় বাগিয়ে নেয় বাংলাদেশ পুলিশের লোভনীয় পদ।
এরপর চাকরী জীবনে ডিএমপিতে সাবেক পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া’র দপ্তরে কয়েক বছর পোস্টিং থাকায় ডিএমপি পুলিশ কার্যালয় হতে সরাসরি পোস্টিং পেয়ে যান ডিএমপি মিরপুর পুলিশ বিভাগে। এডিসি হওয়ার পর থেকেই এডিসি আরিফুল ইসলাম মিঠু পেয়ে জান টাকা কামানোর মেশিন।
ডিসি জসিমউদ্দিন, ডিএমপি ডিবি প্রধান হারুনের প্রশ্রয়ে সে সাধারণ মানুষের কাছে হয়ে ওঠে সাক্ষাৎ যমদূত।পল্লবীতে থাকাকালীন সময়ে এডিসি আরিফুলের অপকর্ম বাস্তবায়নকারী এসআই সজীবকে দিয়ে জমি দখল সহ গ্রেফতার বাণিজ্য, বিত্তশালী বাবামার সন্তানদের ধরে এনে নিজের সংগ্রহে থাকা মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র দিয়ে চালান দেওয়া ও চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে লুটে নিতেন কড়কড়ে টাকার বান্ডিল।
কতিপয় উর্ধতনরা সেসব অবৈধ টাকার বখরা পেয়ে থাকতেন নিশ্চুপ। তাই আসামী ছাড়া ও ধরার একমাত্র অঘোষিত ঠিকাদারী পেয়ে যান এডিসি আরিফুল ইসলাম মিঠু গং।
এছাড়া রাজনৈতিকভাবে বিরোধী দলকে দমন করার মানসে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদেরকে চিরুনি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলার নাটক সাজিয়ে কোর্টে প্রেরণ করে নেওয়া হতো রিমান্ডে। এরপর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের নামে অমানুসিক অত্যাচার করে অস্ত্র উদ্ধারের নামে, মাদক উদ্ধারের নামে বিভিন্ন হত্যা মামলায় (পেন্ডিং মামলায়) আসামি করা হতো ।
যা পল্লবী থানায় বিএনপি, জামায়াতের অসংখ্য সাজানো মামলাগুলো তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।
তবে তার এক সময়ের বস ডিসি জসিম উদ্দিন গ্রেফতার হওয়ার সাথে সাথে গোটা রাজধানীসহ সারাদেশে একমাত্র আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে এডিসি আরিফুল ইসলাম মিঠুর নাম।
মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের এডিসির দায়িত্বে থাকাকালীন বিগত পাঁচ বছরে কারেন্ট জাল বিছিয়ে নদী থেকে মাছ ধরার মতো তৎকালীন পল্লবী থানার এসআই সজীব খানকে দিয়ে যেভাবে চালাতেন নির্যাতন নিপীড়ন, তা পুরো পল্লবী থানার আওতাধীন সাধারণ বসবাসকারী নাগরিকদের কাছে জিজ্ঞাসা করলেই প্রমাণ মিলবে।বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পল্লবীবাসীর দাবি সাবেক পল্লবী জোনের এডিসি আরিফুল ইসলাম মিঠু ও এসআই সজীব খানের সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।