পদত্যাগ করে ছোটবোনকে সঙ্গে নিয়ে গত সোমবার দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এখন ভারতে অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার সকালে পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের এক্স হ্যান্ডলে করা একটি পোস্ট করেছেন। এই পোস্ট নিয়ে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
সামাজিক যোগাযোগা মাধ্যম এক্স-এ ( টুইটার) সায়মা ওয়াজেদ লিখেছেন, এই কঠিন সময়েও আমার মাকে দেখতে পারছি না, তাকে জড়িয়ে ধরতে পারছি না। আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। সায়মা ওয়াজেদ মঙ্গলবারই দিল্লি এসে পৌঁছেছেন।সে ক্ষেত্রে দিল্লি আসার পরেও কেন তিনি তার মা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি – না কি তাকে ভারতীয় কতৃর্পক্ষ দেখা করার অনুমতি দেয়নি- তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সোমবার পাঁচই আগস্ট যখন নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়তে হয়, তখন সায়মা ওয়াজেদ থাইল্যান্ডে ছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা দিল্লির কাছে হিন্ডনে অবতরণ করার ঘণ্টাকয়েক পরেই, সায়মা ওয়াজেদও দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
এর আগে শেখ হাসিনার ছেলে ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আমার মা কখনো বাংলাদেশ ছাড়তে চায় নি। তাকে আমাদের রাজি করাতে হয়েছে। তিনি পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করছিলেন, তিনি একটা ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন এবং সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধ লোকজন গণভবনের দিকে মিছিল করার কথা ঘোষণা করলো, আমরা পরিবারের সদস্যরা তার কাছে অনুনয় করি যে, তারা সহিংসতার জন্য আসছে, তারা হত্যা করতে পারে, তোমাকে নিরাপত্তার জন্য চলে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমার খালা (শেখ রেহানা) তার সঙ্গ ছিলেন। আমার মা চাইছিলেন খালা যেন হেলিকপ্টারে করে সামরিক বিমান ঘাটিতে চলে যান। কিন্তু আমরা মা উঠতে চাচ্ছিলেন না। তখন আমি তাকে এবং আমার খালাকে বলি, তাকে (শেখ হাসিনা) অবশ্যই যেতে হবে। হেলিকপ্টারে করে ঢাকা ছাড়েন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে আগরতলা ও পরে দিল্লী পৌঁছেছেন।
অনেকে অভিযোগ করছেন, আওয়ামী লীগের সময়েও অনেক দমন পীড়ন হয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে। এমনকি দুইজনকে সম্প্রতি আট বছর গুম থাকার পরে দুজনকে মুক্তিও দেয়া হয়েছে। এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, অবশ্যই কিছু ভুল হয়েছে। সরকারের মধ্যে অনেক ব্যক্তি ছিলেন যারা এসব ভুল করেছেন। কিন্তু আমরা সবসময়েই সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করেছি। আমাদের সরকারেই একজন মন্ত্রীর ছেলে, বিশেষ বাহিনীর সদস্য ছিলেন কিন্তু বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য কারাগারে গেছেন (নারায়ণগঞ্জের সাত খুন)। এটাও ঘটেছে। আমার মা সবসময়েই ঠিক কাজটা করার চেষ্টা করেছেন। তবে অনেক সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনেককে গ্রেপ্তার করতে হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। বিশেষ করে গত দুইটি নির্বাচনে বিরোধীরা গণপরিবহনে আগুন দেয়ায় শত শত নিরীহ মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিল’ বলে সজীব ওয়াজেদ দাবি করেন। সেসব ঘটনায় অনেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল শুধুমাত্র লোকজনকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য বলে তিনি দাবি করেন।