চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নারী কর্মীকে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার। ওই নারীকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও ওই নারীকে অপহরণের কথা বলা হয়।
বিষয়টি শোনার পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই নারীকে উদ্ধার করেন। আদতে ওই নারীকে অপহরণ করা হয়নি। তাঁকে তাঁর বাবা ও স্বামী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তিনি চিৎকার করলে ভুল–বোঝাবুঝি হয়।
গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়। তবে ওই নারী অপহরণের স্বীকার হননি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে গতকাল সভার আয়োজন করা করেছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সভার একপর্যায়ে সমন্বয়কেরা জানান, চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে গতকাল এক নারীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাঁকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নেওয়া হয় বলে জানান তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে কয়েক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করলে তা ছড়িয়ে পড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিকেল ৪টার দিকে আগ্রাবাদ এলাকায় সিএনজি অটোরিকশাটিকে আটক করা হয় বলে জানা যায়। চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, ওই নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নামিয়ে দিয়েছে।
পরবর্তী সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রদের নিয়ে হাসপাতালের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করেন সেনাবাহিনীর সদস্য ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনুল হাসান। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মনোরোগ বিভাগ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়।
ওই নারীর স্বামী জানান, তাঁদের শিশুসন্তান চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বুধবার রাত থেকে তাঁর স্ত্রী অসংলগ্ন আচরণ করেন এবং উপস্থিত আত্মীয়স্বজনকে আঘাত করেন। তাই গতকাল তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসছিলেন তিনি। আনার সময় অটোরিকশা থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল। তাতে সবার ভুল ধারণা হয় তাঁকে অপহরণ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার সময় ওই নারী সাহায্যের জন্য চিৎকার করেন। আশপাশের লোকজনের কাছে সাহায্য চাইতে থাকেন যে তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন।