মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের পাঁচ তারকা হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের থাকার গুঞ্জন উঠেছে। এমন খবরে বুধবার (১৪ আগস্ট) সকাল থেকেই সেখানে ভিড় করে উৎসুক জনতা। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রিসোর্টে তল্লাশি চালিয়ে জানতে পারে বিষয়টি গুজব।
এদিকে সেখানে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো. মহসীন মিয়া মধুর বিরুদ্ধে। মেয়রের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের
জাান যায়, শামীম ওসমান গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টে আছেন- এমন গুঞ্জন শোনার পর থেকে আশপাশের উৎসুক লোকজন ও শিক্ষার্থীরা রিসোর্টের পাশে ভিড় করেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে গিয়ে রিসোর্টের প্রবেশদ্বারসহ আশপাশ ঘিরে রাখে। পরে পুলিশের সঙ্গে সেনা সদস্যরা হোটেলে তল্লাশি চালান। কিন্তু শামীম ওসমানকে সেখানে পাওয়া যায়নি। এতে শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট না হলে সেখানে থাকা মেয়র মহসীন মিয়া মধুর সঙ্গে তাদের ঝামেলা হয়। মেয়রের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় শিক্ষার্থীদের ওপর। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, মেয়রের সঙ্গে শামীম ওসমানের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তিনি তাকে নিরাপদে রাখতে চান। তাছাড়া মেয়র মধু সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদের ঘনিষ্ঠ। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের নিরাপদে রাখার জন্য আমাদের ওপর হামলা করেছেন।
শিক্ষার্থী মহালম বলেন, আমাদের কাছে সত্য খবর আছে এখানে শামীম ওসমান আত্মগোপনে আছে। কিন্তু মেয়র তাকে রক্ষা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। মানুষকে ভয় দেখিয়ে সরানোর জন্য হামলা করেছেন। তার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন।
শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, আমরা পুলিশ ও সেনাবাহিনী গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টে গিয়ে তল্লাশি করেছি। এখানে শামীম ওসমান থাকা নিয়ে যে গুঞ্জন উঠেছিল, তা সম্পূর্ণ গুজব। কিছু মানুষ গ্র্যান্ড সুলতানের আশপাশে জড়ো হয়েছিল। আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। এখন স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, এখানে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। গ্র্যান্ড সুলতানে কেউ ছিল না। এখানে কেউ নেই। এসব গুজব।
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্টের ব্যবস্থাপক আরমান খান জানান, শামীম ওসমানের থাকার বিষয়টি গুজব। তাদের রিসোর্টটি অরাজনৈতিক ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি পাঁচ তারকা রিসোর্ট। সুনামের সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে ও পর্যটন খাতকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত করেছে। দেশবাসী সেটা জানে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে কিছু মহল বিচার-বিবেচনা না করেই উসকানিমূলক কিছু পোস্ট ছড়িয়ে দিয়েছে, যা পর্যটন খাত তথা গ্র্যান্ড সুলতানের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার জন্য যথেষ্ট। কোনো কিছু না জেনে-বুঝে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।