গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ নারীসহ ৬ জন নিহত ও অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছে। রবিবার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। দ্রুতগতি ও ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুল কবির চন্দন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ৬ জন হলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশাহী গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে রহিজ শেখ (২৪), সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাতালী গ্রামের সৈয়দ এরশাদ আলীর ছেলে সৈয়দ মামশাদ আলী (৩১), বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার টাউন নওয়াপাড়া গ্রামের আ. সামাদ গাজীর ছেলে সাইদুর রহমান (৪৪), একই জেলার মোল্লাহাট উপজেলার সারুলিয়া গ্রামের মো. হাছির মোল্যার ছেলে মো.সাগর মোল্যা (২৪), খুলনা সদরের টুটপাড়ার আবু হাসানের স্ত্রী তহুরা বেগম (৫৫) ও কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আসলাম উদ্দিন কুদ্দুসের স্ত্রী তানিয়া আফরোজ (২৮)। এর মধ্যে প্রথম ৫ জন ঘটনাস্থলে ও একজন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার উপ-পরিদর্শক মো. সেলিম মিয়া জানান, রবিবার সকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা পরিবহনের একটি বাস ঢাকা যাচ্ছিল। এ সময় বাসটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতিতে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে ও বাসটি খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে বাসের এক নারীসহ ৫ যাত্রী নিহত ও ২৫ যাত্রী আহত হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। মারাত্মক আহত ১৭ জনকে খুলনা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো এক নারী মারা যায়।
দুর্ঘটনার পরপরই ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে মহাসড়কের দুই পাশে বেশ কিছু যানবাহন আটকা পড়লে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা। পরে পুলিশ দূর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাকটি সরিয়ে নিলে যান চলাচলা স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ করেই শব্দ পেয়ে আমরা দ্রুত ছুট যাই। গিয়ে দেখি বাসটি মহাসড়কের পাশে পড়ে গিয়ে দুমডে মুচড়ে যায়। দ্রুতগতি ও ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
গোপালগঞ্জর কাশিয়ানী ১০০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার গোলাম মোস্তফা বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে ৫ জন মারা যায়। বাকি আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহের ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।