কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে যে ৫৭ বাংলাদেশিকে সাজা দেওয়া হয়েছিল, তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
এই বাংলাদেশিদের কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ তথ্য জানান। আরব আমিরাতভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও এ বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
গত জুলাই মাসে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ যখন বিক্ষোভে উত্তাল, সে সময় তাতে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছিলেন বাংলাদেশিরা।
২০ জুলাই সন্ধ্যায় দুবাই, শারজাহ ও আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভের সময় ৫৭ বাংলাদেশিকে আটক করে আমিরাতের পুলিশ। দুদিন পর দাঙ্গা, যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং সম্পদহানীর মত অভিযোগে তাদের তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয় স্থানীয় আদালত।
এরপর বাংলাদেশিদের জন্য ভিসাসুবিধা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ বরার ঘোষণা দেয় আমিরাত সরকার।
পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ১১ আগস্ট জানিয়েছিলেন, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আটক ও দণ্ডিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুক্তির বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
পরদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের মিশনপ্রধান মুহাম্মদ মিযানুর রহমান জানান, দণ্ডিত ৫৭ জনকে মুক্ত করতে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবছে বাংলাদেশ সরকার।
এরই ধারাবাহিকতায় সেই বাংলাদেশিদের পরিবারের জন্য সুখবর আসে মঙ্গলবার। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “সংযুক্ত আরব আমিরাতের মহামান্য প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান দেশটির আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ৫৭ জন বাংলাদেশি প্রবাসীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। তাদেরকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।”
আমিরাত থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সংবাদদাতা জাহাঙ্গীর কবীর বাপপি জানান, প্রেসিডেন্টের আদেশে সে দেশের অ্যাটর্নি-জেনারেল চ্যান্সেলর হামাদ আল শামসি ইতোমধ্যে ৫৭ বাংলাদেশির সাজা বাস্তবায়ন স্থগিত করার এবং তাদের দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করার আদেশ জারি করেছেন।
সেই সঙ্গে আমিরাতের সকল বাসিন্দাকে দেশের আইনের প্রতি সম্মান বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, মত প্রকাশের অধিকার রাষ্ট্র এবং এর আইনি কাঠামো দ্বারা সুরক্ষিত।