আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. মিম্বারে আরোহণ করে বলেন, আমীন আমীন, আমীন। তাঁকে বলা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি তো কখনও এরূপ করেননি।
তিনি বলেন, জিবরা বলেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে বা তাদের একজনকে জীবিত পেলো, অথচ তারা তার বেহেশতে প্রবেশের কারণ হলো না, সে অপমানিত হোক। আমি বললাম, আমীন (তাই হোক)।
অতঃপর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রমযান মাস পেলো, অথচ তার গুনাহ মাফ হলো না সে অপমানিত হোক। আমি বললাম, আমীন।
তিনি পুনরায় বলেন, যার সামনে আপনার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হলো, অথচ সে আপনার প্রতি দুরুদ পড়লো না সে অপমানিত হোক। আমি বললাম, আমীন।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৬৫০)
হাদিসের আলোকে আলেমরা বলেন, নবীজির নাম কোথাও উচ্চারণ করা হলে দরুদ পড়া আবশ্যক। তবে একটি বিষয় হলো কোরআন শরিফেও বিভিন্ন স্থানে নবীজির নাম আছে। পবিত্র কোরআন পাঠ কালে কখনো নবীজির নাম এলে তখনও কি তাঁর উপর দরূদ পড়া আবশ্যক, না তখন স্বাভাবিকভাবে পাঠ করে যেতে হবে?
এ বিষয়ে আলেমদের মতামত হলো, কোরআন মাজিদ তিলাওয়াতের সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম এলে তিলাওয়াতের মাঝে দরুদ শরিফ পড়ার নিময় নেই। এক্ষেত্রে তিলাওয়াতের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। আর তিলাওয়াত ছাড়া সাধারণ অবস্থায় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম উচ্চারণ বা শ্রবণ করলে দরুদ শরীফ পড়বে।
(খিযানাতুল আকমাল ৩/৪৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৭/৫১০; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২২; রদ্দুল মুহতার ১/৫১৯)
কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে মুমিনের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। এবং এতে ঈমান বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, মুমিন তো তারা, যাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং যারা তাদের রবের উপরই ভরসা করে। (সূরা আনফাল, আয়াত : ২)
অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারাই ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমেই দিলের সত্যিকারের প্রশান্তি লাভ করা যায়। (সূরা রাদ, আয়াত : ২৮)
কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে সহিহ মুসলিমে আবু উমামা আল বাহিলি (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘ তোমরা কোরআন পড়ো, কেননা তিলাওয়াতকারীদের জন্য কোরআন সুপারিশকারী হিসেবে আসবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৮০৪)