এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল নিয়ে ধোঁয়াশায় শিক্ষার্থী-অভিভাবক

শিক্ষা

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর স্থগিতকৃত পরীক্ষা না দেওয়ার দাবিতে সচিবালয়ে ঢুকে ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভের পর বাতিল হয়ে গেছে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার স্থগিত থাকা পরীক্ষাগুলো না নিয়েই ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২০ আগস্ট এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু এরপর প্রায় ২০ দিন পার হতে চললেও কীভাবে এই ফল প্রকাশ করা হবে তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি শিক্ষাবোর্ড বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে কীভাবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।সূত্র জানিয়েছে, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশের দিকে এগোচ্ছেন শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু কীভাবে এই সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।জানা গেছে, আন্তশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে এ সাবজেক্ট ম্যাপিং সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা মিলে এই প্রস্তাবনা তৈরি করছেন। সেটি অনুমোদন পেলে এর আঙ্গিকে স্থগিতকৃত পরীক্ষা না নিয়ে ফল প্রকাশের রূপরেখা ঘোষণা করবে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।

গতকাল এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশার গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, যেসব বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি সেই বিষয়গুলোর ফল সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের দুটি পদ্ধতি রয়েছে। একটি হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের ফল থেকে ম্যাপিং করা। আরেকটি হচ্ছে অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি-সমমান মিলে সাবজেক্ট ম্যাপিং করা। সেক্ষেত্রে এসএসসি ও সমমানের ফলের ৭৫ শতাংশ ও জেএসসি-জেডিসির ২৫ শতাংশ নিয়েও এই ম্যাপিং করা হতে পারে। যে পদ্ধতি অনুসরণ করলে ফলপ্রার্থী ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না সেদিকেই যাব আমরা। তিনি বলেন, আমরা এমনভাবে ফল দিতে চাই যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে, কোনো ফলপ্রার্থী যেন বঞ্ছিত না হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, এর আগে করোনাকালে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ছাত্র-ছাত্রীদের পাবলিক পরীক্ষার ফল দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশও আমাদের হাতে রয়েছে। সবদিক বিবেচনা করেই ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থের দিক গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। চলতি বছরের ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সরকার পতনের আন্দোলনে স্থগিত হয়ে যায় বেশ কয়েকটি পরীক্ষা। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিতকৃত পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর ছাত্র-ছাত্রীরা স্থগিতকৃত পরীক্ষা বাতিল করে ফল প্রকাশের আন্দোলন শুরু করলে গত ২০ আগস্ট স্থগিত পরীক্ষাগুলো না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফল কীভাবে প্রকাশ করা হবে তা নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা কাজ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিগগিরই প্রস্তাবনা জমা দেবেন। মন্ত্রণালয় অনুমোদন করলে এটি চূড়ান্ত করা হবে। কবে ফল দেওয়া সম্ভব হবে তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো মাস বা তারিখ জানাতে পারেননি তিনি। শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান আরও জানান, পূর্বের ন্যায় জিপিএর ভিত্তিতে এইফল প্রকাশ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *