আগে ছিলেন যুবলীগ ক্যাডার, সুযোগ বুঝে এখন বিএনপি নেতা!

রাজনীতি

বগুড়া জেলার বগুড়া সদর পৌরসভার ১৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শাওন ওরফে ‘চাঁন্দা শাওন’ ওরফে ‘কিলার শাওন’ সময়-সুযোগ বুঝে নিজেকে যুবদলের নেতা বলে জাহির করে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে। চিহ্নিত অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী এবং কিশোরগ্যাংয়ে দলপতি হিসেবে তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২০টি মামলা চলমান রয়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানিকচক গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন জিল্লারের ছেলে মেহেদী হাসান শাওনের বিরুদ্ধে ৩টি অস্ত্র মামলা, ৫টি মাদক মামলা ৯টি হত্যা/চাঁদাবাজি/ চুরির মামলাসহ প্রায় ২০টি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়াও বগুড়ার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ৫০টির অধিক জিডি ও অভিযোগও রয়েছে। বগুড়া জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত কিশোরগ্যাং নেতা শাওনের রয়েছে ৩০/৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী।

জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যোগদান করে জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালালেও বর্তমানে সে নিজেকে যুবদলের নেতা হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে। ১৯নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি রেজাউল আলম ও সেক্রেটারি মুক্তার হোসেনের ছায়াতলে শাওন নানা কু-কর্ম করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

মেহেদী হাসান শাওনের মতো একজনের কারণে বিএনপির বদনাম হচ্ছে বলেও জানায় এলাকাবাসী। তারা বলছেন, চাঁন্দা শাওনের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে আমরা তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানালে র‌্যাব-১২ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গত ১০ অক্টোবর সকাল ৬টায় সদর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। কয়েকদিন পর জেল থেকে বের হন এবং এলাকায় আবার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, আমাদের দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাকে বহিষ্কার করা হবে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারি সরকারের পতন হলে এই ১৯নং ওয়ার্ডেই আমরা যুবদলের কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাই। এরপর আমরা তদন্ত সাপেক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দুইজন যুবদলের নেতাকে বহিষ্কার করি।তিনি আরও বলেন, আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। বহিরাগত কোনো চাঁদাবাজি, দখলবাজ ক্যাডারদের দলে ঢুকতে দেওয়া হবে না। দলের কারো বিরুদ্ধে যদি এমন অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কার করা হবে।

মেহেদী সম্পর্কে জানতে চাইলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, অপরাধীর কোনো দলের হয় না। কে কোন দলের সেটা দেখে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। চাঁদাবাজ, দখলবাজসহ যারা এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে তাদের বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে মেহেদী হাসান শাওন তার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ে ১০/১৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। কিশোর গ্যাংয়ের হাতে অত্যাধুনিক ১টি একে-৪৭, ৪/৫টি পিস্তল, ৪/৫টি রিভলবারসহ মোট ১৫টি অস্ত্র রয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র: চ্যানেল আই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *