স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও মৌলভীবাজারসহ দেশের বেশ কিছু অঞ্চল। জাতীয় সংকটের এই সময় দায়িত্ব পালনে কেউ অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
এছাড়া অনতিবিলম্বে সরকারি-বেসরকারি সব বোট দেশের বন্যাদুর্গত এলাকায় নিয়োজিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান করে বলুন প্রধান উপদেষ্টা থেকে নির্দেশ আছে। এক ঘণ্টার মধ্যে কন্ট্রোল রুম চালু করুন।
তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানকে যেন আর শিক্ষার্থীদের ঘেরাও করা না লাগে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ শুরু করুন। সব বাহিনী উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদেরকে যেন আর নির্দেশনা দেওয়া না লাগে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সব শ্রেণির মানুষকে জাতীয় প্রয়োজনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান নাহিদ।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই বাঁধ খুলে দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বাংলাদেশের বিপক্ষে যদি কোনো রাষ্ট্র দাঁড়ায় তাহলে আমাদের ছাত্র-জনতা তা রুখে দেব।
টানা বৃষ্টি এবং ভারতের ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে দেওয়ায় দেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও মৌলভীবাজারসহ বেশ কিছু অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় কয়েক লাখ মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বন্যার্তরা নিজেদেরকে উদ্ধারের আকুতি জানিয়েছেন।
এ অবস্থায় বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে নেমে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় মতিঝিলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে গিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নেমে পড়ুন। সব বাহিনী উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদের যেন আর নির্দেশনা দেওয়া না লাগে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সব শ্রেণির মানুষকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বন্যাদুর্গত এলাকায় দ্রুত সরকারি-বেসরকারি স্পিড বোট পাঠানোসহ পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয় থেকে যাবেন না বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ। দাবিসমূহ:
১. সরকারি-বেসরকারি যত স্পিড বোট আছে এই মুহূর্তে বন্যা কবলিত স্থানে পাঠাতে হবে।
২. ছোট ছোট লঞ্চ বিভিন্ন পোর্টে যেগুলো আছে খুব দ্রুতই বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠাতে হবে।
৩.বন্যায় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সব যানবাহনকে কর্তৃপক্ষ থেকে জরুরিভাবে জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে।
৪. সব বেসরকারি ট্রলার ও স্পিড বোটকে এই ক্রান্তিলগ্নে ফ্রি করে দিতে হবে।
৫. যতদিন এই দূর্যোগ অবস্থা বিরাজমান থাকবে ততদিন ২৪ ঘণ্টাই কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং প্রতিটি এলাকায় প্রতিনিধি পাঠাতে হবে।