সমাজ ও রাষ্ট্রে পতন দেখা দিলে মুমিন নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকবে না

ধর্ম

সমাজ ও রাষ্ট্রে পতন দেখা দিলে মুমিন নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকবে না, বরং এর প্রতিকারের চেষ্টা করবে; বিশেষত উম্মতের পথপ্রদর্শক আলেম এ ক্ষেত্রে দ্বিনের নির্দেশনা তুলে ধরবে। আবু উমাইয়া হুজায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে তোমাদের ওপর এমন শাসকদের নিযুক্ত করা হবে, যাদের (কিছু কাজ) তোমরা ভালো দেখবে এবং (কিছু কাজ) গর্হিত। সুতরাং যে ব্যক্তি (তাদের গর্হিত কাজকে) ঘৃণা করবে, সে দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে এবং যে আপত্তি ও প্রতিবাদ জানাবে, সে-ও পরিত্রাণ পেয়ে যাবে। কিন্তু যে ব্যক্তি (তাতে) সম্মত হবে এবং তাদের অনুসরণ করবে (সে ধ্বংস হয়ে যাবে)।

সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? তিনি বললেন, না, যে পর্যন্ত তারা তোমাদের মধ্যে নামাজ কায়েম করবে।’
(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৯০৬)এ ক্ষেত্রে দ্বিনি নেতাদের দায়িত্ব আরো বেশি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার আগে আল্লাহ যে নবীকে যে উম্মতের মধ্যে পাঠিয়েছেন তাদের মধ্যে তাঁর কিছু সহযোগী ও সঙ্গী হতো। তারা তাঁর সুন্নতের ওপর আমল করত এবং তাঁর আদেশের অনুসরণ করত।

অতঃপর তাদের পরে এমন অপদার্থ লোক সৃষ্টি হয় যে তারা যা বলে, তা করে না এবং তারা তা করে, যার আদেশ তাদেরকে দেওয়া হয় না। সুতরাং যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে নিজ হাত দ্বারা সংগ্রাম করবে সে মুমিন, যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে নিজ জিভ দ্বারা সংগ্রাম করবে সে মুমিন এবং যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে নিজ অন্তর দ্বারা জিহাদ করবে সে মুমিন। আর এরপর সরিষা দানা পরিমাণও ঈমান নেই।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৮৮)
তবে এর অর্থ কোনোভাবে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলাকে নস্যাৎ করা নয়।কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) এই মর্মে সাহাবিদের বাইআত নিয়েছিলেন যে তারা দুঃখে ও সুখে, আরামে ও কষ্টে এবং তাদের ওপর অন্যদের প্রাধান্য দেওয়ার অবস্থায় তারা তাঁর পূর্ণ আনুগত্য করবেন। রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে তার কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার লড়াই করবে না; যতক্ষণ না তারা তার মধ্যে প্রকাশ্য কুফরি দেখে, যে ব্যাপারে তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে দলিল আছে। আর তারা সর্বদা সত্য কথা বলবে এবং আল্লাহর ব্যাপারে কোনো নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭২০০)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *