বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। পদত্যাগ করে সোমবার (৫ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এদিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাস্তায় নামে জনতার ঢল। এ সময় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রী ও এমপিদের বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ কর্মীদের অনেকেই দলের নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপিদের খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা তাদের খোঁজ পাননি। এমনকি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মধ্যেও কারো অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারা সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে তাদের অনেক ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, তারা নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন। এমনকি অনেকের ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ সময় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (তাব) ফারুক খানের ফোনে রিং হলেও রিসিভ করেননি তিনি। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ছিলেন ফারুক খান।
জানা গেছে, সোমবার পর্যন্ত শতাধিক মন্ত্রী, এমপি ও নেতা দেশ ছেড়েছেন। তারা রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, চীন ও দুবাই পাড়ি জমান। ৪ আগস্ট রাতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ছিলেন তিনি। তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক নিজ এলাকা গাজীপুরেই অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, আলোচিত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসভবন সোমবার ভাঙচুর হলেও তিনি ঠিক কোথায় ছিলেন জানা যায়নি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাতের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে নওফেল সোমবার রাতে ঢাকাতেই ছিলেন।