গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
‘সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের সঙ্গে সখ্যতা রয়েছে’ এমন অপবাদ দিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়ি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে একজন যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী কবির তালুকদার (৪৫) শ্রীপুর উপজেলার শৈলাট গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের সন্তান। অভিযুক্ত সেলিম আহমেদ (৪২) গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক।
কবির তালুকদার তার ব্যবসার স্বার্থে আওয়ামীলীগকে সমর্থন করতেন বলে জানিয়েছেন। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শ্রীপুর পৌর এলাকার দারগার চালা গ্রামে কবির তালুকদার কর্তৃক নির্মিত একটি ৫ তলা বাড়ি জবরদখল করেছেন যুবদলনেতা সেলিম। তাকে ডিবি প্রধান হারুনের সঙ্গে সখ্যতার তকমা দিয়ে মারধর করে বাড়ি জবরদখলে নেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাড়ি জবরদখল প্রসঙ্গে জানতে কবির তালুকদারের ওই বাড়িতে গেলে সেলিমের দূর সম্পর্কের ভাতিজা মানিক ও তার স্ত্রী প্রকাশ্যে কবির তালুকদারের স্ত্রী’কে হুমকি দেন।
কবির তালুকদার তার ওই বাড়িটি নির্মাণের জন্য ব্যাংক লোন করেছিলেন, ব্যবসায়ীক স্বার্থে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করতেন তিনি। এই অপবাদকে কাজে লাগিয়ে সেলিম আহমেদ বাড়ি জবরদখলের ঘটনাটি সম্পন্ন করেছে বলে জানা যায়। অভিযুক্ত সেলিমের ক্ষমতার দাপট দেখানো এবং লুটপাট প্রসঙ্গে মুখ খোলেন বাড়ির ভাড়াটিয়া ও বাড়ি নির্মাণ কাজ করা কয়েকজনসহ প্রতিবেশীরা। বাড়ি নির্মাণের শুরু থেকে প্রতিবেশী আব্দুস সোবহান কবির তালুকদারের কাছে কাঠ বিক্রি করেছেন, তিনি বলেন, বিএনপি এখনও ক্ষমতায় আসেননি। ক্ষমতায় আসার আগেই সেলিম কবির তালুকদারকে মারধর করে বাড়িটি দখল করে সেখানে মানিক নামের একজনকে থাকতে দেয়। মানিক তার দূর সম্পর্কের ভাতিজা। বর্তমানে কবির তালুকদার তার বাড়িতে উঠতে পারছেনা। ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে বাড়ি নির্মাণ করেও নিজের বাড়িতে যেতে পারছেনা কবির তালুকদার। আমরা এলাকাবাসী এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ সেলিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও ইলেকট্রিক মিস্ত্রী মো. বেলায়েত, রাজমিস্ত্রী নজির আহমেদ এবং একাধিক ভাড়াটিয়া এক-ই দাবি জানান।
বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী মো. শহর আলী জানান, সেলিমের নেতৃত্বে আমাকে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে সেলিম আমার কাছে গিয়ে ক্ষমা চায়, আমি তাকে ক্ষমা করিনি। আমি সেলিমসহ তার সহযোগীদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেলিম আহমেদ বলেন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের সহযোগিতায় কবির তালুকদার বাড়িটি দখল করে। হাসিনার পতনের পর আমাদের জমি আমরা বুঝে নিই। এ বিষয়ে আমার পিতা আরো বিস্তারিত বলতে পারবে। সেলিমের পিতা মোতালিব বেপারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে উভয় পক্ষ-ই শ্রীপুর থানায় পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনও তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর-ই সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের সঙ্গে সখ্যতার অপবাদ দিয়ে ৫ তলা একটি ভবন জবরদখলের বিষয়টি চাওড় হলে এলাকাবাসী সোচ্চার হয়। বিএনপি ক্ষমতায় আসার আগেই যদি এরকম অপকর্মে লিপ্ত হয় বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা, তাহলে দলটির জন্য ভালো কিছু ইঙ্গিত করছেনা বলে দাবি সচেতন মহলের। চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ করে এমন গর্হিত অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।